চট্রগ্রাম: চট্টগ্রামের সদরের বড়বাজারে একজন হিন্দু বৃদ্ধ দোকানকর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর কোতোয়ালী থানাধীন বকশির হাট পুলিশ বিটের সদস্যদের বিরুদ্ধে।

বুধবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কাপড়ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ বড়বাজার টেরিবাজারে মোহোদ্দেছ মার্কেটে ঘটনাটি ঘটে। বৃদ্ধ ওই দোকানকর্মীর নাম গিরিধারী (৬৫)। বয়স্ক এ লোকটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

ঘটনাস্থলে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী জানান, গিরিধারী (৬৫) মোহাদ্দেছ মার্কেটস্থ প্রার্থনা বস্ত্রালয় নামের দোকানের অংশবিশেষ ঠিক ইফতারের আগমুহূর্তে খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। এই সময় দোকান সম্পূর্ন খোলা ছিল না। বকশির হাট বিটের সহকারী উপ-পরিদর্শক কামরুল এবং সমিতির নিয়োগ দেওয়া দারোয়ান কফিল উদ্দিনসহ কয়েকজন এরই মধ্যে ওই দোকানের সামনে যান। তাদের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে এটুকু দেখেছি তবে তাদের মধ্যে কী বিষয়ে কথা হয় তা স্পষ্ট বুঝতে পারিনি। এরপরই দেখি এএসআই কামরুল এবং কফিল উদ্দিন দোকানকর্মী গিরিধারীকে বেধড়ক মারছেন। এরপর উনাকে বিট পুলিশের কার্যালয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

দুঃখ প্রকাশ করে ঘটনাস্থলে থাকা ওই ব্যবসায়ী বলেন, এখন মার্কেট বন্ধ। গিরিধারী হয়তো কোনো কাজে দোকান খুলে ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। তবে তিনি দোকানের ভেতরে কেন প্রবেশ করেছিলেন, সেটা আমি জানি না। হঠাৎ ইফতারের পরই শুনি গিরিধারী মারা গেছেন।

সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসে টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির একজন নেতার কাছ থেকে। তিনি জানান, পুলিশ ও দারোয়ান কফিল উদ্দিনসহ অন্যরা মিলে একজন বয়স্ক মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। শ্রমিকদল নেতা কফিল উদ্দিন ব্যবসায়ীদের নানা অজুহাতে জিম্মি করে টাকা আদায় করাসহ পুলিশ বিটের পুলিশ সদস্যদের সোর্স হিসেবে কাজ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন জানান, প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, গিরিধারী দোকান খুলবার পর অসুস্থবোধ করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।

প্রসঙ্গত পিটুনির অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গিরিধারী স্ট্রোক রোগী ছিলেন। তাছাড়া লোকটির গায়ে হাত তোলার কোনোরকম তথ্য আমি পাইনি। তবে তদন্ত করা হবে এ বিষয়টি নিয়ে।

এছাড়া পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান জানান গায়ে হাত তোলার তথ্য না পাওয়ার কথা। কফিলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি কোন তথ্য পান নি বলেও দাবি করেন।

এ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আবদুর রউফকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা মিললে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়।

জেবি/আরকে