করোনা মুক্তির অব্যর্থ দাওয়াই – হার্বাল টি বা ভেষজ চা। যে সে ভেষজ চা নয়, নির্দিষ্ট উপকরণ নির্দিষ্ট হারে মিশিয়ে তবেই তা তৈরি করতে হবে। দিনে দু’বার এক কাপ করে খেলেই করোনা উধাও। চারপাশে এই ভয়াবহ সংক্রামক পরিস্থিতিতে এমনই আশার বাণী শুনিয়েছে আয়ুশ মন্ত্রক। এবার আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির প্রতি মন্ত্রকের পরামর্শ, ঘরে ঘরে এই হার্বাল টি পৌঁছে দিতে টি ব্যাগ বা স্যাশে তৈরি করুন যত বেশি সম্ভব। চা পানের মাধ্যমেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

আরও পড়ুন: করোনা থেকে বাঁচাবে ড. বিজন শীলের এই ঘরোয়া রেসিপি

দেখে নেওয়া যাক, করোনা ভাইরাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যুদ্ধ করতে পারে কী এমন সেই ভেষজ চা? উপকরণ বলতে মাত্র চারটি – তুলসী, দারচিনি, শুকনো আদা এবং গোলমরিচ। এই চারটি ভেষজ উপকরণকে ৪:২:২:১ অনুপাতে মিশিয়ে তৈরি হবে চা পাতা। এরপর এক কাপ ঈষদুষ্ণ জলে তা বানাতে হবে, চা তৈরির মতোই। তবে হ্যাঁ, চিনি দেওয়া চলবে না একেবারেই। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যদি এই ভেষজ চা খেতে খুব খারাপ লাগে, তাহলে বড়জোড় সামান্য গুড় বা লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে। তাতে চাঙা হবে শরীর, মনও।

কী ভাবছেন? এই উপকরণ জোগাড় করে, নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে তৈরি করে খাওয়া বড্ড ঝক্কির? সেই কারণেই আয়ুশ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞরা এই চা বাজারজাত করার পরামর্শ দিয়েছেন আয়ুর্বেদ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে। বলা হয়েছে, টি ব্যাগ তৈরি করুন। খুব সহজেই যে কেউ ওই ব্যাগটি গরম জলে ডুবিয়ে নিজের পছন্দমতো লিকার বানিয়ে খেতে পারবেন। তাছাড়া এই তুলসী, দারচিনি, শুকনো আদা এবং গোলমরিচ দিয়ে ট্যাবলেটও তৈরি করা যেতে পারে। তাও জনগণের পক্ষে সহজে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। তবে শুধু এই হার্বাল টি নয়, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এই আবহে মাঝেমধ্য উষ্ণ জলও খেতে হবে। এটি স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। ফলে যে কোনও সংক্রমণের সঙ্গে যুঝতে পারবে শরীর।

এই চা অথবা ভেষজ টোটকার কথা প্রথম উল্লেখ করা হয়েছিল চিনা গবেষণাপত্রে। সেই গবেষণাপত্র প্রকাশ করে প্রথমে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল ‘সংবাদ প্রতিদিন’। তার ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আয়ুশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট বিধি তৈরি করার কথা বলেন। সেইমতো তাঁরাই ‘ক্বাথ’ বা এই ভেষজ সান্দ্র মিশ্রণকে দাওয়াই হিসেবে তুলে ধরেন দেশবাসীর কাছে। তাঁদের পরামর্শ মেনে যদি আয়ুর্বেদ সংস্থাগুলি তুলসী, দারচিনি, শুকনো আদা ও গোলমরিচের টি ব্যাগ তৈরির পর বিপুল পরিমাণে বাজারজাত করতে পারে, তাহলে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তা বেশ কার্যকরী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।