বাংলাদেশি বাবা-মেয়ে ডাক্তার যুগল সফলভাবে করোনাভাইরাস জিনোম সিকোয়েন্স উদঘাটন করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশে ভাইরাসটির গতি প্রকৃতি নির্ণয় করতে পারবেন গবেষকরা।

ডা. সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) আট সদস্যের একটি গবেষক দল জিনোম সিকোয়েন্সের ম্যাপিংয়ের কাজ করে।

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. সমীর কুমার সাহা ও ঢাকা শিশু হাসপাতালে চাইল্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক ডা. সেঁজুতি সাহা যৌথভাবে তাদের কৃতিত্বের কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। সিএইচআরএফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ আক্তারুজ্জামান লিখেছেন, জিনোম সিকোয়েন্স করা এখন রোগের মূল অনুসন্ধানের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। একে বলা হয় ‘জিনোমিক প্রেডিকশন’।

তিনি বলেন, ‘একটি ভাইরাস সংক্রমণ যখন জনসংখ্যার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তখন সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষকদের ভাইরাসটির জেনেটিক পরিবর্তনগুলো শনাক্ত করতে সহায়তা করবে।’

ড. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘বেশ কয়েকজন রোগীর কাছ থেকে সংগৃহীত ভাইরাল জিনোমের জিনগত অনুক্রমের পরিবর্তনগুলো দেশে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে এ রোগের বিস্তারকে পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করবে।’

তিনি লিখেন, এ মুহূর্তে ভাইরাল জিনোম সিকোয়েন্স থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো আমাদের দেশে প্রচলিত নির্দিষ্ট ভাইরাল স্ট্রেনগুলো শনাক্ত করা, সংক্রমণের হটস্পট বা সুপার-স্প্রেডার শনাক্ত করা এবং জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য কৌশল প্রণয়ন করা।

‘এটি আমাদের নিজস্ব জনগোষ্ঠীর জন্য একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে সহায়তা করবে।’

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব বেড়েই যাচ্ছে। সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল ধরনের অপ্রয়োজনীয় পরিষেবা ও পরিবহন সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ধাপে ধাপে সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হলেও পরিস্থিতি ভালো না হয়ে দিনদিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে।

বুধবার (১৩ মে) বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে ১৯ জনের মৃত্যুসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৯ জনে। আর নতুন করে আরও ১১৬২ জন আক্রান্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১৭ হাজার ৮২২ জন।