দেশে করোনা মহামারির থাবা বিস্তৃত হচ্ছেই। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ঈদের পর এই সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এমন অবস্থায় একমাত্র প্রত্যেকের সচেতনতাই পারে এই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের শৃঙ্খল ভেঙে দিতে।

দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট উদ্ভাবন করে ইতোমধ্যে ব্যাপক পরিচিতি ও অভিনন্দন পেয়েছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল। এর আগেও এই অণুজীব বিজ্ঞানীর বিশ্বজোড়া সাফল্য ও কৃতিত্বের জন্য খ্যাতি রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল। দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন ঘরে বসেই করোনাভাইরাস মোকাবিলালা কার্যকর কিছু উপায়।

পরামর্শগুলো ড. বিজন শীলের ভাষায় সরাসরি উল্লেখ করা হল-

(১) ‘করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের সবাইকে এর মুখোমুখি হতে হবে। আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। এটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া মানেই মারা যাওয়া। এখন পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশে যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে, তার ক্ষতিকর দিকটি বেশ দুর্বল। আক্রান্তের পর আপনি যদি আতঙ্কিত হয়ে নার্ভাস না হন, ভাইরাস আপনার তেমন ক্ষতি করতে পারবে না।

(২) যদি একটু খারাপ লাগতে থাকে, জ্বরজ্বর বা অল্প কাশি অনুভূত হয়, তবে দিনে তিন চারবার হালকা রং চায়ে গোলমরিচ, লং দিয়ে খাবেন এবং তা দিয়ে তিন চারবার গার্গল করবেন। এতে গলায় অবস্থানকালেই ভাইরাসকে মোকাবিলা করা যাবে।

(৩) আর ভিটামিন-সি’র কোনও বিকল্প নেই। এখন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষের সকালে ২৫০ রাতে ২৫০ মোট ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া দরকার। করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি। ভিটামিন সি’র দাম বেশি না। আমলকিসহ এ জাতীয় যা এখন পাওয়া যায়, সেগুলো খেতে হবে।

(৪) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র একটি ভিটামিন সি জিঙ্ক তৈরি করছে। এটা খুবই ভালো। জিঙ্ক ট্যাবলেটও এ ক্ষেত্রে উপকারী। জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

(৫) সব মানুষের আরেকটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে মনে রাখা দরকার, থুথু যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কেন থুথু বিষয়ে বলছে না, বুঝতে পারছি না। হাঁচি বা কাশির চেয়ে থুথু অনেক বেশি বিপদের কারণ হতে পারে। থুথু শুকিয়ে ডাস্টে পরিণত হয়ে ভাইরাস অনেক দিন টিকে থাকতে পারে। থুথু বা কফ থেকে পানির মাধ্যমে ভয়াবহভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে সবার সতর্ক হওয়া দরকার। কোনও আক্রান্ত রোগীর প্রস্রাব বা পায়খানা যদি পানির লাইনে সংমিশ্রণ ঘটে যায়, সেটাও হতে পারে বড় বিপদের কারণ।

(৬) সাবান দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে। আর সাধারণ সবজি-ফল পরিষ্কার পানি দিয়ে দুইবার ধুয়ে নিলেই চলবে।

(৭) সতর্ক থাকতে হবে। কোনও কিছু নিয়েই আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। আতঙ্কিত হলে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।’

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন