নেত্রকোনা : মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নেত্রকোনায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার কংস নদীর পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দার উব্দাখালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জেলার কলমাকান্দা, বারহাট্টা ও সদর উপজেলাসহ নদী তীরবর্তী অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।  

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র কলমাকান্দা উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ২ শতাধিক গ্রামের প্রায় ৩০ হাজারের মতো মানুষ এই ঢলের পানিতে এখন বন্দি রয়েছেন।

এছাড়াও জেলার সদর বারহাট্টা, দূর্গাপুরসহ হাওর উপজেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকায় ২০ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে প্রথম দফায় ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়া  বিভিন্ন সড়ক পুনরায় ভাসতে ভাসতে দ্বিতীয় দফায় পানি চলে আসে। এতে করে নেত্রকোনা-কলমাকান্দা সড়ক যোগাযোগ আবারো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে । ঘুরে যেতে হয় দূর্গাপুর দিয়ে।

কিছু কিছু সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস ট্রাক সিএনজি। আবার অনেক সড়কের বিভিন্ন স্থান পাড়ি দিতে হচ্ছে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায়।

অন্যদিকে যদিও হাওরাঞ্চল পুরো সাত থেকে আটমাস পানিতেই নিমজ্জিত থাকে তারপরও সুনামগঞ্জ থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল খালিয়াজুরির ধনু নদ দিয়ে প্রবেশ করছে। যে কারনে এই অঞ্চলের বিভিন্ন হাওর উপচে মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরিসহ কলমাকান্দার বেশ কিছু গ্রামের ভেতর পানি প্রবেশ করেছে।

এদিকে পাহাড়ি জনপদ কলমাকান্দার রংছাতি ইউনিয়নের সাথে উপজেলার যোগাযোগও রয়েছে বিচ্ছিন্ন।

পাহাড়ি নদী এবং হাওর দিয়ে যেতে হয় ছত্রংপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে। বড়খাপন ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রামের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় কলমাকান্দা উপজেলার সদরসহ ওইসব এলাকার প্রায় শতাধিক মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।   

জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, সোমবার পর্যন্ত সব মিলিয়ে জেলায় ২২ থেকে ২৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলায় ৪০০ মেট্রিক টন জিআর, জিআর বাবদ নগদ টাকা ৮ লাখ, শিশুখাদ্য ক্রয়ের জন্য ২ লাখ টাকা, গো-খাদ্য ক্রয়ে ২ লাখ ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।  

তবে রোদ উঠলে এবং মেঘালয়ের ভারি বৃষ্টিপাত কমে গেলে পাহাড়ি এসকল পানিও নামতে শুরু করবে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

নয়ন বর্মন, নেত্রকোনা প্রতিনিধি | বাংলাদেশদর্পণ.কম