বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য কক্সবাজার জেলায় নির্মিত হয়েছে এই ভবন। 

বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০ টি ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধাণমন্ত্রী। ১০০১ টাকা মূল্যে ৬০০ টি পরিবার ভবনগুলোতে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেছেন প্রধাণমন্ত্রী।

সরকারের ১৮০০ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পে মোট ১৩৯ টি ভবন তৈরি করা হবে। যার মধ্যে ২০ টি ভবন আজ উদ্বেধন হয়েছে। প্রতিটি ভবন তৈরি হয়েছে পাঁচ তলা করে এবং প্রতি ভবনে ৪৫৬ বর্গফুট আয়তনের ৩২টি করে ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছে। সবগুলো ভবন তৈরি হবার পর নোংরা পরিবেশ ছেড়ে পরিপাটি এই ভবনগুলোতে আশ্যয় পাবে ৪০০০ পরিবার। প্রতিটি ফ্ল্যাটে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সিলিন্ডারের সুবিধা থাকবে। এছাড়াও প্রতিটি ভবনে থাকবে সৌর বিদ্যুতের প্যানেল।

প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, খুরুশকুলে বাঁকখালী নদীর তীরে ২৫৩ একর জমির ওপর গড়ে  উঠা এই আশ্রয় কেন্দ্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয় কেন্দ্র বলতে পারি। এ প্রকল্পে রয়েছে ১৪ টি খেলার মাঠ, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুলিশ ও ফায়ার স্টেশন, তিনটি পুকুর, মসজিদ, মন্দির, দুটি বিদ্যুতের সাবস্টেশন থাকবে। এছাড়াও থাকবে  বর্জ্য পরিশোধন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, ২০ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ৩৬ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা।  যারা ফ্ল্যাট পাবেন তাদের ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা হবে।  একটি শুঁটকি মহালও থাকবে এবং এখানে পর্যায়ক্রমে বিক্রয় কেন্দ্র ও প্যাকেজিং শিল্পও গড়ে তুলবে সরকার।


প্রকল্পের ভবনগুলোর নাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেখেছেন, ভবনগুলো হলো—দোঁলনচাপা, কেওড়া, রজনীগন্ধা, গন্ধরাজ, হাসনাহেনা, কামিনী, গুলমোহর, গোলাপ, সোনালী, নীলাম্বরী, ঝিনুক, কোরাল, মুক্তা, প্রবাল, সোপান, মনখালী, শনখালী, বাঁকখালী, ইনানী ও সাম্পান।

২০১৯ সালে গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের চেয়ারম্যান জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের এই প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করার কথাও উল্লেখ করেন প্রকল্প পরিচালক।

প্রকল্পের নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর দশম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং এরিয়া কমান্ডার মো. মাঈন উল্লাহ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এটি অত্যন্ত নয়নাভিরাম একটি জায়গা। এই জায়গাটিকে সুরক্ষিত করার জন্য মাটিকে অনেক উঁচু করা হয়েছে। প্রতিটি ভবনের নিচের তলায় কোনো ফ্ল্যাট রাখা হয়নি। ফলে ঘূর্ণিঝড় হলে জলোচ্ছ্বাসের পানি ঢোকারও আশঙ্কা নেই।