কিশোরগঞ্জে নতুন করে ২৩ জনের শরীরে করোনা  শনাক্ত হয়েছে।  এ নিয়ে জেলায় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯৯৫।

২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন দুইজন। এ নিয়ে জেলায় মোট মারা গেছেন ৩৬ জন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ১৯ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৭৪৫ জন।

বুধবার (২৯ জুলাই) রাতে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে এ তথ্য পাওয়া যায়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলার সিভিল সার্জন  ডা. মো. মুজিবুর রহমান।

নতুন করোনা শনাক্ত হওয়া ২৩ জনের মধ্যে ১৪ জনই কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার। বাকি নয়জনের মধ্যে করিমগঞ্জ উপজেলায় রয়েছেন দুইজন, পাকুন্দিয়ায় উপজেলায় পাঁচজন এবং কটিয়াদী উপজেলায় রয়েছেন দুইজন।

মারা যাওয়া দুইজনের মধ্যে একজনের বাড়ি হোসেনপুর উপজেলায়। তিনি অন্য জেলায় করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন। ৪৩ বছর বয়সী এই পুরুষ ঢাকার একটি হাসপাতালে বুধবার (২৯ জুলাই) মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত ব্যক্তি আরেকজন ৬৫ বছরের নারী। তিনি জেলায় করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন। বুধবার (২৯ জুলাই) তিনিও ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। তিনি কিডনি রোগেও ভুগছিলেন।

নতুন সুস্থ হওয়া ১৯ জনের মধ্যে ১১ জনের বাড়ি  কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায়। বাকি আটজনের মধ্যে তাড়াইল উপজেলার একজন, পাকুন্দিয়া উপজেলার দুইজন, কটিয়াদী উপজেলার একজন এবং বাজিতপুর উপজেলার চারজন।

সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান জানান, সুস্থ ও মৃত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে বর্তমানে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২১৪ জন কোভিড-১৯ রোগী রয়েছেন।  এদের মধ্যে ২৪ জন হাসপাতালে এবং বাকি ১৯০ জন নিজ নিজ বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন। হাসপাতালে থাকা ২৪ জনের মধ্যে তিনজন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।

এছাড়া অন্য জেলায় শনাক্তকৃত একজন করোনা পজেটিভ এবং  ছয়জন সাসপেক্টটেড/নেগেটিভ বিভিন্ন হাসপাতাল ও নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রি-আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত জরুরী রোগীসহ সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা ৯৪ জনের নমুনা কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়।

অন্যদিকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংগৃহীত দুইজনের নমুনা আইসিডিডিআরবিতে পরীক্ষা করা হয়।

দুটি ল্যাবে মোট ৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে নতুন ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

উপজেলাওয়ারী হিসেবে এ পর্যন্ত কোভিড রোগী পাওয়া গেছে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫৬৯ জন, হোসেনপুর উপজেলায় ৪৯ জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ১২০ জন, তাড়াইল উপজেলায় ৮৫ জন,  পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১০৯ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ১১৬ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ১০৮ জন, ভৈরব উপজেলায় ৫৫৫ জন, নিকলী উপজেলায় ৩৯ জন, বাজিতপুর উপজেলায় ১৬২ জন, ইটনা উপজেলায় ৩২ জন, মিঠামইন উপজেলায় ৩৮ জন  ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় ১৩ জন।

এর মধ্যে  কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সাতজন, হোসেনপুর উপজেলার একজন, করিমগঞ্জ উপজেলার দুইজন, তাড়াইল উপজেলার একজন, কটিয়াদী উপজেলার একজন, কুলিয়ারচর উপজেলার তিনজন, ভৈরব উপজেলার ১৪ জন, নিকলী উপজেলার তিনজন, বাজিতপুর উপজেলার দুইজন, ইটনা উপজেলার একজন ও মিঠামইন উপজেলার একজন মারা যান।

বর্তমানে জেলার ২১৪ জন করোনায় আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীর মধ্যে  সদর উপজেলায় রয়েছেন সর্বোচ্চ ১০৯ জন। হোসেনপুর উপজেলায় রয়েছেন  আটজন, করিমগঞ্জ উপজেলায় নয়জন, তাড়াইল উপজেলায় চারজন, পাকুন্দিয়ায় উপজেলায় ১৬ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ১২ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় তিনজন, ভৈরব উপজেলায় ৩৬ জন, নিকলী উপজেলায় সাতজন, বাজিতপুর উপজেলায় আটজন, ইটনা উপজেলায় একজন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় রয়েছেন একজন।

জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে একমাত্র মিঠামইন উপজেলায় বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন কোভিড রোগী নেই।

 

অর্জুন কর্মকার | কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি| বাংলাদেশ দর্পন