নেত্রকোণা : দেশে করোনাজনিত কারণে দীর্ঘ ৪ মাস  যাবৎ রেল যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ থাকায় দেশের অন্যান্য স্থানের মত নেত্রকোণাতেও এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে। উপার্জনহীন হয়ে পড়েছে  এখাতের সাথে জড়িয়ে থাকা কয়েকশত ভ্রাম্যমাণ হকার।যাদের বেশিরভাগই পান-সিগারেট,পানীয়-বিস্কুট-চিপস,চানাচুর-মুড়ি,সংবাদপত্র প্রভৃতি ফেরী করে বিক্রি করতেন। একই দুর্দশা স্টেশনকেন্দ্রিক বিভিন্ন দোকানিদেরও।স্টেশনগুলোতে রেলযাত্রীদের আনাগোনা না থাকায়,বন্ধ হয়ে গেছে তাদেরও আয় রোজগার।এমন অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মানুষগুলোকে।

 

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহ জংশন থেকে মোহনগঞ্জ রেলস্টেশন পর্যন্ত রেলপথে যে কয়েকটি ট্রেন চলাচল করতো সেখান থেকেই  প্রায় ৪শত হকার প্রতিদিন তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো। যা এখন অতীত। নেত্রকোণা রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায় সুনশান নিরবতা, জনমানবের কোন চিহ্ন নেই। ব্রিটিশ আমল থেকে চালু হওয়া এই রেলপথ শতাব্দী পার করলেও এর আগে কখনও এত দীর্ঘ সময় জুড়ে বন্ধ থাকার নজির নেই।

 

জনশূন্য স্টেশনে ক্রেতার আশায় বসে থাকা হকার প্রদীপ চৌহান জানান,অন্যকোন কাজ জানা না থাকায় প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্লাটফর্মেই বসে থাকেন তিনি। অপেক্ষা করেন স্টেশনের নিস্তব্ধতা ভেঙে আবারো একদিন ট্রেন আসবে। আবারো গতি পাবে তাদের জীবনগাড়ি।

উল্লেখ্য,সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন নিয়মকানুন জারি করে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা চালু করলেও, সাধারণ মানুষের কাছে তা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন যাত্রীর জন্য দুইসিট নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাই গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া।  সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অজুহাতে এই নিয়ম করা হলেও  অধিকাংশ পরিবহণ শ্রমিকরা তা মানছে না। গাদাগাদি করে যাত্রী তোলার চিত্র এখন সর্বত্র স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তাই এমতাবস্থায় রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখার কোন যৌক্তিক কারণ নেই বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষের অনেকেই।

নয়ন বর্মন, নেত্রকোণা প্রতিনিধি | বাংলাদেশদর্পণ.কম