কৈবল্যধাম মন্দিরটি চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের কর্নেলহাটের কাছে, ফিরোজ শাহ কলোনির সঙ্গে অবস্থিত।  কৈবল্যধাম কথাটির অর্থ হলো -মোক্ষধাম বা স্বর্গ।

কৈবল্যধামের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের দিগন্ত ছোঁয়া মনোমুগ্ধকর দৃশ্য; তেমনি আকর্ষণীয় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য। ঐ পাশেই রয়েছে "কৈবল্য শক্তি" নামের বটগাছটি এবং "কৈবল্য কুন্ড" নামে বড় একটা পুকুর; ভক্তরা সেখানে পুণ্যস্নান করে থাকেন। পুকুরের উত্তর দিকে "গয়াঘর" নামে একটা জায়গায় শ্রাদ্ধাদি অনুষ্ঠান করা হয়। ঠাকুর বলেছিলেন যে, এখানে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করা হলে ভারতবর্ষের গয়ায় কাজ করলে যে সুফল লাভ হয় তেমনটাই হবে। পরবর্তীকালে আশ্রম প্রাঙ্গণে নির্মিত করা হয় হর-গৌরী মন্দির এবং অথিতি-ভক্তদের থাকা ও অন্যান্য ক্রিয়াকর্মের জন্য নতুন একটি ভবন।

শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর তার নরলীলা শেষ করার পূর্বে একটা আশ্রম প্রতিষ্ঠা করার কথা ভাবতে থাকেন। আর তখন তিনি তার ইচ্ছার কথা ভক্তদের জানালে তারা ঠাকুর এর আশ্রম করার জন্য বিভিন্ন জায়গা খুজতে থাকলে সেটা ঠাকুরের পছন্দ হয় নাই। তার কিছু দিন পরে অনেকগুলি জায়গা ঘুরে দেখার পর ঠাকুর যখন বিশ্রাম নিচ্ছিলেন একটা বট গাছের নিচে, তখন নিজেই পাহাড়তলির একটা পাহাড়ের মাথায় একটা জায়গা চিহ্নিত করে দেন তাঁর আশ্রমের জন্য। 

পরবর্তীকালে সেই আশ্রমের নামকরণ হয় "শ্রীশ্রীকৈবল্যধাম" আর বটগাছটির নাম হয় "কৈবল্য শক্তি"। তখন থেকে এর নাম হয় কৈবল্যধাম। একান্ত জনবিরল সেই জায়গাটির মালিক ছিলেন শ্রী মহেন্দ্রলাল ঘোষাল। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী চঁপলা দেবী ও পুত্র হাঁরাধান ঘোষাল তাঁদের শ্রদ্ধার দান হিসেবে শ্রীশ্রীঠাকুরকে জায়গাটি দিয়েছিলেন। পাহাড়টা ঢাকা ছিল ঘন জঙ্গলে আর সেখানে ছিল কিছু হিংস্র জন্তুজানোয়ার। 

জায়গাটা দ্রুত পরিষ্কার করার পর একটা ছোট মন্দির গড়া হলে অধিকাংশ ভক্ত চাইলেন ১৯৩০ সালের এপ্রিল বা মে মাসে একটা শুভ দিন দেখে শ্রীশ্রীকৈবল্যধাম উদ্বোধন করা হোক। ঠাকুর কিন্তু ঘোষণা করলেন যে, ঊদ্বোধন হবে ১৯৩০-এর ২৬শে জুলাই এবং সেই দিনই আশ্রমের উদ্বোধন হয়েছিল যদিও সেই অনুষ্ঠানে ঠাকুর উপস্থিত থাকতে পারেননি।

পাহাড়তলির শ্রীশ্রীকৈবল্যধামের বার্ষিক উৎসবও বটে এবং এটি চলে পাঁচ দিন ধরে। ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমবেত হন এবং উৎসব চলার দিনগুলিতে উপস্থিত ভক্তবৃন্দ সমস্ত দিনই প্রসাদ গ্রহণ করেন। তা ছাড়া প্রতি সপ্তাহান্তে হাজার হাজার ভক্ত মহাপ্রসাদ গ্রহণ করে থাকেন।