রাস্তার দুইধার দিয়ে সবুজ শ্যামল গাছপালায় আচ্ছাদিত ছায়া ঘেরা একটি স্থানের নাম সেলফি মোড়।  যশোর শহর থেকে সাত কিলোমিটার উত্তরে সদরের কায়েত খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন তিন রাস্তার সংযোগস্থলে জায়গাটি অবস্থিত। 

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সামাজিক বন বিভাগ যশোর এর উদ্যোগে ২০১৪-২০১৫  অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে সামাজিক বনায়নের আওতায় গড়ে তোলা হয় এই সামাজিক বন। রোপণ করা হয় বাবলা, আকাশ মনিসহ কয়েক প্রকার গাছ। পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে বেড়ে ওঠে রোপনকৃত চারা গাছগুলি । সবুজে আচ্ছাদিত হয়ে ওঠে  রাস্তার দুইধার। রাস্তার  এধারের ডাল-পাতা ওধারের ডাল-পাতা একে অপরের সাথে জড়িয়ে গেছে। যেন একে অন্যের হাত ধরে আছে। সূর্যালোক পৌঁছায়না এখানে। অন্ধকারচ্ছন্ন সবুজে ঘেরা এক সুন্দর রাজ্য। এলাকার কোনো একজন একদা সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানটির পরিচয় ঘটলে দূরদুরান্ত থেকে প্রতিদিনই  ভিড় জমান  দর্শনার্থীরা।  সকল বয়সের মানুষ এখানে এসে ঘোরাঘুরি করেন এবং সেলফি তোলেন।  বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত।   ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে সাংবাদিক কিশোর বিশ্বাস,  মাসুম বিল্লাহ, সোহেল রানার  যৌথ উদ্যোগে তিন রাস্তার সংযোগস্থলে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানেই এ স্থানের আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা হয় সেলফিমোড়। এ  অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য আল-আমিন হোসেন,সদর উপজেলা  যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক  মাজহারুল ইসলাম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম।  তারপর থেকেই ওই স্থানের নাম হয়ে যায় সেলফিমোড়।  তবে স্থানীয় জনসাধারণ ও মহিলারা এই স্থানটিতে  শীতল বায়ু প্রবাহের কারণে এসির মোড়ও  বলে থাকেন।   দৃষ্টিনন্দন এই সেলফি মোড় দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। সেলফি মোড়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী টি-স্টল। প্রথমদিকে এখানে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলেদের আনাগোনা থাকলেও প্রশাসনের তৎপরতায় শান্তি শৃঙ্খলা বিরাজমান।  তবে রোডের পাশে অনেক কৃষকের জমিতে ছায়াপড়ে বলে অবৈধভাবে ডালপালা কেটে সয়লাব করা ও বন খেকোদের সুযোগ বুঝে গাছকাটার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।  যা সেলফিমোড়ের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য্য নষ্ট করে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে কঠোর অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে সামাজিক বন বিভাগ যশোরের  বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএফএনটিসি ভারপ্রাপ্ত  ( রেঞ্জ অফিসার) আব্দুল খালেক বলেন, সেলফি মোড় নাম আমরা শুনেছি এবং দর্শনার্থী এখানে আসছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছে শুনে আনন্দিত।