ঢাকা:পঞ্চম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার। এদিন সারাদেশে ৭০৮টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই ঘটেছে একাধিক সহিংসতার ঘটনা। 

সহিংসতায় সারাদেশে ছয়টি জেলায় নিহত হয়েছে ১০ জন। এর মধ্যে বগুড়ায় চারজন, চাঁদপুরে দুইজন, মানিকগঞ্জ, নওগাঁ, গাইবান্ধা ও চট্টগ্রামে একজন করে নিহত হয়েছে। 

বগুড়া: বগুড়ার গাবতলীতে ইউপি  নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকার কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে এক নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ দিন সন্ধ্যায়  উপজেলার বালিয়াদিঘী ইউনিয়নের কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, বগুড়া গাবতলী উপজেলার বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের কালাইহাটা গ্রামের খোকনের স্ত্রী কুলসুম আক্তার, মকবুল হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন, মৃত ইফাত উল্লাহর ছেলে আব্দুর রশিদ। এছাড়াও রাজ্জাক নামের একজনের মরদেহ গাবতলী হাসপাতালে রয়েছে বলে জানা গেছে ৷ তবে তার পিতার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

চাঁদপুর: চাঁদপুরের কচুয়ার ও হাইমচরে ইউপি  নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

এরমধ্যে কচুয়া উপজেলার সাচার ইউনিয়নের হাতিরবন্ধ কেন্দ্রের বাইরে ইউপি সদস্যদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে শরীফ নামে একজন নিহত হয়েছেন। 

হাইমচর উপজেলার নীল কমল ইউনিয়নের ইশানবালা ৬ নম্বর ওয়ার্ডে  দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে নিহত আরেকজন। তবে তার নাম পরিচয়ন জানা যায়নি।

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের  সংঘর্ষের সময় সহিংসতার মধ্যে পড়ে স্ট্রোক করে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

নিহত নারীর নাম ছলেমন খাতুন (৫০)। তিনি দৌলতপুরের বাচামারা গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী। 

নওগাঁ: নওগাঁয় পত্নীতলা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পুলিশ ও সমর্থকদের সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।

এ ঘটনায় নিহতের পরিচয় জানা যায়নি।

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার জুম্মারবাড়ী ইউনিয়নে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জুম্মাবাড়ি আদর্শ কলেজকেন্দ্রে গলা কেটে একজন হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

নিহতের নাম আবু তাহের (৩৮)। তিনি জুম্মারবাড়ি ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের মো. ওমর আলীর ছেলে।

নিহত তাহের মেম্বার প্রার্থী আইজল মিয়ার (টিউবওয়েল প্রতীক) সমর্থক ছিলেন। এ ঘটনায় তাহের প্রতিদ্বন্দ্বী মেম্বার প্রার্থী রাসেল আহমেদের (ফ্যান প্রতীক) কর্মী-সমর্থকদের হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন তার স্বজনরা।

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সিংহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এলাকায় মেম্বার প্রার্থী রঘুনাথ শিকদার ও নাজিম উদ্দীনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজনের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। 

নিহতের নাম অংকুর দত্ত (৩৮)। তিনি সিংহরা দত্তবাড়ীর নেপাল দত্তের ছেলে।

সহিংসতায় বিপক্ষ দলের কর্মী-সমর্থকদের হামলায় গুরুত্বর আহত হন অংকুর দত্ত। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য,বুধবার (৫ জানুয়ারি) পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রথম থেকেই সহিংসতার আশঙ্কা করে ছিলো নির্বাচনী প্রার্থীরা। তবে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেও ঠেকানো যায়নি নির্বাচনী সহিংসতা। যদিও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠেই ছিলো প্রশাসন। 


প্রকিবেদক,বাংলাদেশ দর্পণ