নেত্রকোণাঃ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে বাংলা লোকসাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ ময়মনসিংহ গীতিকার সংগ্রাহক নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার আইথর গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত চন্দ্রকুমার দে’র স্মৃতি রক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার দুপুরে নেত্রকোণা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় চন্দ্রকুমার দে’র বসতভিটা পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে তিনি জেলা পরিষদের অর্থায়নে চন্দ্রকুমার দে স্মৃতি ম্যুরাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় স্থানীয় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন ভূইয়া, পৌর মেয়র আসাদুল হক ভূঞা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাজিব হোসেন, প্রগতি পাঠক চক্রের সভাপতি রণেন সরকার, সাংবাদিক ও ছড়াকার সঞ্জয় সরকার, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি চারণ সাংবাদিক সমরেন্দ্র বিশ্ব শর্মা, পৌর কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র আব্দুল হামিদ, চন্দ্রকুমার দে স্মৃতি সংসদের সভাপতি কামরুল হাসান ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আল মামুন কোকিল, সাংগঠনিক সম্পাদক পাপ্পু সেন গুপ্ত, গণসাহিত্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েশ উদ্দিন ভূইয়া, কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জীবন, কবি ও সাংবাদিক মাইন উদ্দিন সরকার রয়েল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল আহমেদসহ স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, ১৮৮৯ সালে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন চন্দ্রকুমার দে। পরে তিনি কেন্দুয়া পৌর সদরের আইথর গ্রামে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। অভাব-অনটনে দিন কাটতো তার। এ অবস্থায় তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে লোকমুখে শুনে সংগ্রহ করতেন বিভিন্ন পালা কাহিনী। ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত সৌরভ পত্রিকার মাধ্যমে চন্দ্রকুমার দে’র এসব লেখা পড়ে আকৃষ্ট হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর দ্বীনেশ চন্দ্র সেন। তারপর তিনি চন্দ্রকুমার দে সংগ্রহিত এসব লেখা নিয়ে ময়মনসিংহ গীতিকা প্রকাশ করে প্রশংসিত হন এবং বিশ্ব সাহিত্য দরবারে আর্বিভূত হন চন্দ্রকুমার দে। ১৯৪৬ সালে চন্দ্রকুমার দে ময়মনসিংহের নওমহল এলাকার একটি বাসায় মারা যান। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। তার মৃত্যুর পর আইথর গ্রামে রেখে যাওয়া ৭৩ শতাংশের বসতবাড়িটি চন্দ্রকুমার দে’র পালিত সন্তান বিনয় কুমার ও জোৎস্না রানী স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করে দেন।


প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ