ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় আগামী মাস থেকে বিশ্বজুড়ে আবারও  টিকার রফতানি ও উপহার পাঠানো শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের একদিন আগে সোমবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

দেশে করোনাভাইরাসের উল্লম্ফনের কারণে গত এপ্রিলের মাঝের দিকে বিশ্বজুড়ে টিকার রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত; এতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টিকার সংকটে পড়ে।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী মাস থেকে উদ্বৃত্ত টিকার রফতানি এবং উপহার পাঠানো পুনরায় শুরু করবে ভারত। 

গত মার্চের শুরুর দিকে ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়; সেই সময় দৈনিক গড়ে ৪ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন এবং প্রতিদিন ৪ হাজারেরও বেশি মৃত্যু দেখে দেশটি।

পরিস্থিতি সামাল দিতে এপ্রিলের মাঝামাঝি বিদেশে টিকা রফতানিতে স্থগিতাদেশ দেয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকার উৎপাদনকারী ভারত। বর্তমানে সেই বিপর্যয় অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে বেড়েছে টিকাদানের গতিও।

ভারতের প্রাপ্ত বয়স্ক ৯৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে টিকার পূর্ণ ডোজ দিতে চায় দেশটির সরকার। এখন পর্যন্ত এই জনগোষ্ঠীর ৬১ শতাংশকে মাত্র এক ডোজ করে টিকা দেওয়া হয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগের দিন সোমবার টিকার রফতানি পুনরায় শুরুর এই ঘোষণা এল। ওয়াশিংটনে কোয়াডভূক্ত চার দেশ— যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার নেতাদের সম্মেলনে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

পুনরায় শুরু হতে যাওয়া টিকার রফতানি, যা ‘ভ্যাকসিন মৈত্রী’ নামে পরিচিত— তাতে প্রতিবেশী প্রথম নীতি অগ্রাধিকার পাবে জানিয়ে মান্দাভিয়া বলেন, গত এপ্রিল থেকে দেশে ভ্যাকসিনের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে এবং আগামী মাস থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডোজের চারগুণ বেশি হতে চলেছে। দেশে টিকাদানের পর শুধুমাত্র উদ্বৃত্ত টিকাই রফতানি করা হবে জানিয়ে ভারতের এই মন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশিরাই প্রথম।

এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে প্রায় ৬৭ কোটি ডোজ টিকা উপহার ও রফতানি হিসেবে পাঠিয়েছে ভারত।

উপহার ও রফতানি হিসেবে ভারত পাঠিয়েছিল করোনা টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভারতীয় সংস্করণ কোভিশিল্ড, যেটি প্রস্তুত করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া।

 

প্রতিবেদক,বাংলাদেশ দর্পণ