চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় একটি বৌদ্ধ মন্দিরে সন্ত্রাসী হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছ। এ ঘটনায় ভগবান বুদ্ধের মূর্তি ভাংচুর ও মন্দিরের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

রবিবার (৩মে) রাতে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের বিবিরবিলা গ্রামে অবস্থিত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শান্তি বিহারে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, হামলার পর থেকে ওই এলাকার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন।

হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ এই শান্তি বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত এস. ধর্মতিলক ভিক্ষু, রবিবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রায় ৪০ জনের মত লোক মন্দিরে আক্রমণ করে। তারা মন্দিরের জানালা, প্রাচীর এবং একটি বুদ্ধ মূর্তি ভাঙচুর করে।’

‘প্রাণে বাঁচার জন্য আমি মন্দিরের রুমের আলনার পেছনে লুকিয়ে ছিলাম। তিন রাউন্ড গুলি ছুড়ে তারা মন্দিরে আক্রমণ করেছিল,’ যোগ করেন এই বৌদ্ধ ভিক্ষু।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর সংশ্লিষ্টতা আছে।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল ও তার অনুসারীরা হামলা করে, অভিযোগ গ্রামবাসীর।

অভিযুক্ত হেলাল নিজেকে চরম্বা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মন্দিরে আক্রমণ করিনি। আমি এমপি নদভীর হয়ে কাজ করি এ কথা সত্য। তবে কোনো মন্দিরে হামলার নির্দেশ তিনি আমাদের দেননি।’

এমপি নদভী তার সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি শুনেছি আমার দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে ওই এলাকার রকি বড়ুয়া নামের এক জনের ঝামেলা হয়েছিল। পুলিশ আমাকে বিষয়টি জানায়। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘হামলার কথা জানার পরে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল পাঠিয়েছি। অপরাধীরা মন্দিরের দেওয়াল, জানালা এবং একটি বুদ্ধ মূর্তি ভাঙচুর করেছে।’

মন্দির কমিটির সভাপতি জয়সেন বড়ুয়া রবিবার রাতেই মন্দির ভাংচুরের বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসাইন এ বিষয়ে বলেন, মন্দিরে হামলা চালিয়ে মূর্তি ও মন্দির ভাংচুর করার বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।