প্রায়ই অনেকেই প্রশ্ন করেন যে, ফ্রিল্যান্সিং কী, আমি ফ্রিল্যান্সিং করতে খুবই আগ্রহী বা কিভাবে শুরু করবো ঠিক বুঝতে পারছি না। তো আমি চিন্তা করলাম সবাইকে ইনবক্সে আলাদা মেসেজ না দিয়ে একটা আর্টিকেল লিখলে সবাই মোটামুটি একটা ধারনা পাবেন। তো চলুন শুরু করি।
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) কী?
ফ্রিল্যান্সিং-এর অর্থ হলো স্বাধীন বা মুক্ত পেশা। এটার বিভিন্ন রকম সংজ্ঞা হতে পারে, বর্তমান সময় অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং বলতে যেটা বোঝায় তা হলো, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাইরের দেশের ক্লায়েন্টের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রজেক্ট বা কাজ নিয়ে সেগুলো দেশের যেকোন স্থান থেকে সম্পন্ন করে উপার্জন করারকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। আর এধরনের পেশাজীবিকে বলে ফ্রিল্যান্সার।
কী ধরনের কাজ পওয়া বা করা যায়?
নিচে আমি একটি স্ক্রিনশট দিয়েছি যেটা দেখলে একটা ধারনা পাবেন যে কি কি ধরনের কাজ পাওয়া যায়।
ফ্রিল্যান্সার হতে হলে কি কি থাকা আবশ্যক?
কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে বিভিন্নে প্রকার ইন্সট্রুমেন্ট দরকার হতে পারে। তবে যে জিনিসগুলো লাগবেই তা হলো:
১) কম্পিউটার
২) ইন্টারনেট সংযোগ
৩ যেকোন একটি বিষয়ের উপর কাজের দক্ষতা
৪) ইংরেজিতে কথোপকথন জানতে হবে
৫) হেডফোন
৬) ওয়েব ক্যাম ইত্যাদি
আমি কীভাবে শুরু করব?
বর্তমানে গুগল ও ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল আছে। আপনাকে প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন বিষয়ের উপর কাজ শিখবেন। নিচের স্ক্রিনশট টা পুনরায় দেখুন। কমপক্ষে একটি বিষয়ের উপর আপনার দক্ষতা থাকতে হবে। অধিক বিষয়ের উপর দক্ষতা আপনাকে বেশি কাজ পেতে সহায়তা করবে।
কোন কাজটা সহজ? কোন কাজটা করলে ভাল হবে এবং তাড়াতাড়ি উপার্জন করা যাবে?
এইসব প্রশ্ন করা বোকামী। যাকে এই প্রশ্নটা করবেন সে অবশ্যই নিজে যে কাজটা করে সে কাজটাকেই সহজ বলবে, কারণ সে কাজটা তার কাছে সহজ । কিন্তু, আপনার কাছে সে কাজটা সহজ বা ভাল নাও লাগতে পারে। আপনার কোন কাজে দক্ষতা বা ইন্টারেস্ট লাগবে সেটা অন্য কেউ বলে দিতে পারবেনা । সুতরাং, আগে সব কাজ সম্বন্ধে জানুন এবং নিজেই ঠিক করুন কোনটি আপনার কাছে সহজ বা সুইটেবল্।
তারপর গুগল ও ইউটিউব থেকে ওই কাজের উপর টিউটোরিয়াল খুজে বের করুন এবং সেগুলা দেখে প্রাকটিস করুন।
যাইহোক, একটা কথা মাথায় রাখবেন, এই লাইনের প্রধান হাতিয়ার ধৈর্য। আপনাকে ধৈর্য নিয়ে কাজ শিখতে হবে। সাধারন একটা চাকরি করার জন্য আমরা ১৫-২০ বছর পড়াশোনা করি, তাহলে আপনি ভাবুন যে আপনি ফ্রীল্যান্সার হবেন, হাজার হাজার ডলার উপার্জন করবেন কিন্তু কাজ শেখার জন্য কমপক্ষে একটি বছর সময় যদি ব্যায় না করেন তাহলে কিভাবে হবে! এজন্য প্রথমে কাজ শেখার জন্য প্রতিদিন ১-২ ঘন্টা সময় ব্যায় করুন নিয়মিত। একদিনে কিছু শেখা সম্ভব না, এজন্য নিয়মিত হতে হবে।
আর কাজ শেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মার্কেটপ্লেসে কেউ একাউন্ট করবেন না। ধরুন আপনি কাজ পারেন না কিন্তু মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট করার পর ভাগ্যক্রমে একটা কাজ পেয়ে গেলেন কিন্ত কাজটা কম্পিলিট করতে পারলেন না, তাতে আপনার একাউন্টের তো ক্ষতি হবে, সাথে ঐ ক্লায়েন্টও আমাদের দেশের ফ্রীল্যান্সারদের উপর একটা খারপ ধারনা পাবে যে বাংলাদেশের ওয়ার্কাররা কাজ ভালো পারেনা। এজন্য প্রথমে কাজ শেখার প্রতি মনোযোগী হোন।
সংশ্লিষ্টদের আগ্রহ থাকলে পরবর্তীতে আরো লিখেবো, কোন কোন সাইটে কাজ পাওয়া যায়, কিভাবে প্রোফাইল করতে হয়, কিভাবে কাজে বিড করতে হয় ইত্যাদি বিষয়ে।
লেখক: সনজিৎ কুন্ডু, ফ্রিল্যান্সার