নেত্রকোণা : প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে ইজারাদারগণের বেপরোয়া রয়্যালিটি বৃদ্ধির কারণে নেত্রকোণা জেলার দূর্গাপুর উপজেলার সকল বালুবাহী যানবাহন যৌথভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহন সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ। ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা জেলার মটরযান কর্মচারী ইউনিয়ন যৌথভাবে বুধবার (১৫জুলাই) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বালুবাহী ট্রাক-গাড়ি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে সংগঠনের ব্যানারে বিজ্ঞপ্তিও প্রচার করা হয়েছে।

 

জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা দূর্গাপুরের বালু মহলে ইজারাদারগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি রয়্যালিটি উত্তোলন করছে। প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত তালিকা প্রকাশ না করায় ইজারাদারগণের মনগড়া মূল্য দিয়ে বালু ক্রয় করার কারণে বালুর দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে এর সাথে সংশ্লিষ্ট নির্মাণশিেল্পর বালু শ্রমিক, পরিবহন মালিক-শ্রমিকগণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পরিবহন শ্রমিকরা অতিরিক্ত রয়্যালিটি গ্রহণের প্রতিবাদ জানালে বিভিন্নভাবে লাঞ্চিত ও অত্যাচারের সম্মুখিন হচ্ছেন। যাকে কেন্দ্র করে পরিবহন মালিক-শ্রমিকগণের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ অসন্তোষ বিরাজ করছে। এরই প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ জিলা মটর মালিক সমিতি, ময়মনসিংহ জেলাযান কর্মচারী ইউনিয়ন, নেত্রকোনা জেলা ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-ট্যাংকলরী মালিক সমিতি ও নেত্রকোনা জেলা মটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের সিদ্ধান্তক্রমে ১৫জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দূর্গাপুর উপজেলার বালুবাহী যানবাহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।

 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সীমান্তের সোমেশ্বরী নদীর ১ নং বালু মহালের ইজারামূল্য নির্ধারিত হয় ২৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা, ২ নং মহালের ১২ কোটি ৪ লাখ টাকা, ৪ নং মহালের ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা ও ৫ নং বালু মহালের ইজারামূল্য ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

নেত্রকোণা জেলা মটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আদব আলী বলেন, ইজারাদারগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে রয়্যালিটি নেয়ার জন্য নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করি। কিন্তু জেলা প্রশাসক মহোদয় এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও এখনও এর সমাধান হয়নি । যার কারণে যৌথভাবে মালিক ও শ্রমিকদের চাপের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বালুবাহী যানবাহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে ময়মসিংহ জেলা মটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সানাউর হোসেন সানু বলেন, বালু মহলে ইজারাদারগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারের চেয়ে ১০/১৫ গুন বেশি হারে রয়্যালিটি উত্তোলন করছে। তারই প্রেক্ষিতে ৮জুলাই ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করে আবেদন করি। তারপরও প্রত্যাশিত সমাধান না পাওয়ায় ময়মনসিংহ-নেত্রকোণার ৪টি সংগঠনের নের্তৃবৃন্দের মতামত ও সিদ্ধান্তক্রমে ১৫ জুলাই থেকে নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার সকল বালুবাহী ট্রাক-গাড়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত রয়্যালিটির তালিকা প্রকাশ ও সেই হারে ইজারাগণ বালুর রয়্যালিটি উত্তোলন না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।

নয়ন বর্মন, নেত্রকোনা প্রতিনিধি | বাংলাদেশদর্পণ.কম