নেত্রকোনা: "শ্বাশ্বত মানবিক বোধের আর্তত্রাতা" শিরোনামে সদ্যপ্রয়াত মানবসেবী নিত্যানন্দ গোস্বামী নয়নের স্মরণে আলোচনা সভা করেছেন কবি ও কাব্যজনেরা।

পরম্পরা প্রকাশনীর উদ্যোগে শুক্রবার(১১ই সেপ্টেম্বর)বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের কাঁচারিপাড়ায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

কবি অনিন্দ্য জসিমের সভাপতিত্বে ও কবি শামীম আশরাফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন সংগঠক আবুল কালাম আল আজাদ, কবি শফিউল স্বপন,কবি জনপদ চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা এই মহৎ মানুষটির জীবন ও কর্ম,তার মানবপ্রেম, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ বিষয়ে আলোকপাত করেন।

নিত্যানন্দ গোস্বামী নয়ন ১৯৫০ সালে দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডীগড় গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। এক বৎসর বয়সেই তিনি মাতৃহারা হন, সাত বছর বয়সে পিতাকেও হারান,এগারো বৎসর বয়সে একমাত্র বোনের ও মৃত্যু হয়।তার কোন ভাই নেই। এক বৎসর বয়স থেকেই তিনি মামার আলয়ে লালিত পালিত হন। ষোল বৎসর বয়সে তিনি সংসার ত্যাগ করে পাহাড়ে,জঙ্গলে ,গাছতলায় ,শশ্মানে ,তীর্থক্ষেত্রে,নদীতটে, অদ্বৈত ধামে সুদীর্ঘ সাত বছর সাধনা করেন। সেখান থেকে পরে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মানুষের মাঝে মনুষ্যত্ব জাগরণ, মানুষে মানুষে একতা স্থাপন,প্রতিটি ছেলে-মেয়ে কে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে স্বাবলম্বী করণ, পুরনো মঠ, মন্দির, আশ্রম সংস্কার সহ নতুন করে মঠ -মন্দির-আশ্রম স্থাপন কাজে নিয়োজিত ছিলেন।ধর্মীয় ভাব জাগরণের জন্য সিরাজগঞ্জে মাসিক ধর্মীয় জাগরণী বার্তা পত্রিকার রেজিষ্ট্রেশান নিয়ে আট বছর প্রচার কাজ চালান।তিনি প্রতি শীতকালে গরীবের মাঝে শীত নিবারণের জন্য কম্বল বিতরণ করেন। নিজের বাড়ি, জমি, সহায় সম্পদ সর্বস্ব অনাথ ছেলেমেয়েদের কল্যাণে দান করেন।

তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ হরিনাম প্রচার সংঘ, বাংলাদেশ মানবসেবা সংঘ, মানবকল্যাণ কামী অনাথালয়, অনিকেত বৃদ্ধালয়, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা আশ্রয়কেন্দ্র, সজীব হোমিও দাতব্য চিকিৎসালয়, নয়ন যোগী আশ্রম, ধর্মীয় জাগরণী শিক্ষাকেন্দ্র সমূহ, হরিসভা সমূহ প্রভৃতি।

মহান এই মানুষটি সমাজে মানবিকতার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার মহাপ্রয়াণে তার প্রতিষ্ঠিত এসব প্রতিষ্ঠান গুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে সকলের সহযোগীতা অনস্বীকার্য বলে মনে করছেন অনেকেই।

নয়ন বর্মন। নেত্রকোনা প্রতিনিধি