ভাদ্র পূর্ণিমার পরবর্তী প্রতিপদ থেকে অমাবস্যা তিথি পর্যন্ত পিতৃপক্ষ। অমাবস্যা পিতৃপক্ষের শেষ। হিন্দুধর্ম অনুসারে জীবিত ব্যক্তির তিন পূর্বপুরুষ প্রয়াত হওয়ার পরে পিতৃলোকেই বসবাস করেন। এই পিতৃলোক হল স্বর্গ ও মর্ত্য এই দুই লোকের মাঝাখানে অবস্থিত। এই লোকের প্রধান হলেন যমদেবতা। তিনিই মৃত ব্যক্তিকে পিতৃলোকে নিয়ে যান।
মহাভারতে কর্ণের আত্মা স্বর্গে অবস্থান কালে খাদ্যদ্রব্য হিসেবে তাকে স্বর্ণ এবং রত্ন দেওয়া হয়। কর্ণ এর কারণ জানতে চাইলে তাঁকে বলা হয়, দাতা কর্ণ সারা জীবন স্বর্ণ এবং রত্ন দান করে গিয়েছেন, পিতৃপুরুষের উদ্দেশে খাদ্য বা জল দান করেননি। এই কারণে তাঁকে স্বর্গে স্বর্ণ এবং রত্ন খাদ্য হিসাবে দেওয়া হচ্ছে। কর্ণ বলেন, পিতা এবং পিতৃপুরুষের সম্বন্ধে তিনি অবহিত ছিলেন না। যুদ্ধের আগের রাতে তাঁর মা তাঁকে পিতা এবং পিতৃপুরুষের সম্বন্ধে অবহিত করেন। পিতৃপুরুষের উদ্দেশে খাদ্যদ্রব্য এবং জল প্রদান না করা তাঁর (কর্ণের) অনিচ্ছাকৃত ভুল। কর্ণকে ভুল সংশোধন করার জন্য ইন্দ্র (মতান্তরে যম) ১৬ দিনের জন্য মর্তে গিয়ে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে অন্ন এবং জল দানের অনুমতি দেন। এই ১৬ দিন পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়। পূর্ব পুরুষের মৃত্যুর তিথিতেই (পিতৃ পক্ষে) তর্পণ করা উচিত। সম্ভব না হলে পিতৃপক্ষের শেষ দিন অর্থাৎ অমাবস্যায়।
তর্পণ কী? পূর্বপুরুষ, ঋষি, পিতামাতা এবং গুরুর উদ্দেশে খাদ্যদ্রব্য ও জল নিবেদনে তাঁদের তুষ্ট করাই হল তর্পণ (বিভিন্ন তর্পণে বিভিন্ন রীতি বা প্রক্রিয়া রয়েছে)।
কেন তর্পণ করা হয়? পুরাণে বলা হয়েছে পিতৃপুরুষ তুষ্ট হলে, তাঁদের আশীর্বাদে দীর্ঘায়ু, ধন সম্পত্তি, জ্ঞান, শান্তি এবং মৃত্যুর পর স্বর্গ ও মোক্ষ লাভ হয়।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার পিতৃপক্ষের শেষ দিন।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে—
ইংরেজি ১৬/০৯/২০২০, বাংলা ৩১ ভাদ্র, ১৪২৭, বুধবার, সময় রাত ৭টা ৫৮ মিনিটে অমাবস্যা শুরু।
ইংরেজি ১৭/০৯/২০২০, বাংলা ১ আশ্বিন, ১৪২৭, বৃহস্পতিবার, সময় বিকেল সাড়ে ৪টেয় অমাবস্যা শেষ।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে—
ইংরেজি ১৬/০৯/২০২০, বাংলা ৩০ ভাদ্র, ১৪২৭, বুধবার, সময় রাত ৭টা ০৩ মিনিট ৪১ সেকেন্ডে অমাবস্যা শুরু।
ইংরেজি ১৭/০৯/২০২০, বাংলা ৩১ ভাদ্র, ১৪২৭, বৃহস্পতিবার, সময় বিকেল ৫টা ০৩ মিনিট ০৮ সেকেন্ডে অমাবস্যা শেষ।