মনে পড়ে বঙ্কিমচন্দ্রের অমর সৃষ্টি 'কপালকুণ্ডলা' উপন্যাসে কপালকুণ্ডলার উক্তি নায়ক নবকুমারের প্রতি। আজ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সহ প্রগতিশীল অংশের প্রায় সবাই নবকুমারের মত বাঁচবার পথ, মুক্তির পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। কোন শক্তিময়ী কপালকুণ্ডলা জাতিকে সত্যিকারের পথ দেখাতে পারবে কিনা তা কেউ জানে না। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ নামক দেশটির ললাটরেখায় এমন হবার কথা ছিল না। এরপরেও এদেশীয় সংস্কৃতি বিরোধী মৌলবাদীদের রাহুগ্রাসগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে দেশ। দিনেদিনেই মৌলবাদীদের আস্ফালন। কিন্তু কেন এমন হল?আজ এদেশের সার্বজনীন অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে আস্ফালন করা মৌলবাদীদের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভূমিকা কি ছিল?
প্রশ্নগুলোর উত্তর আজ আমাদের খুঁজতে হবে ইতিহাসের পাতা থেকে। উত্তরগুলো আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাঙালি ইতিহাস থেকে কখনো খুব একটা শিক্ষা নেয়নি।বাংলাদেশের কট্টর ইসলামপন্থীদের দৃষ্টিতে দেশে মূর্তি, ভাস্কর্য কিছুই থাকতে পারবে না। মৌলবাদীদের ঔদ্ধত্য সত্যি বিস্ময়কর। তারা তাদের বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক বিভেদমূলক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য দেশে আদাজল খেয়ে ধর্মব্যবসায় নেমেছে। তাদের দৃষ্টিতে এদেশীয় সংস্কৃতির প্রায় সকলই হারাম। আজ এটা করা যাবে না, কাল সেটা করা যাবেনা, শুধুই তাদের রক্তচক্ষুর হুমকি। এক অবর্ণনীয় ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছে তারা সারা দেশময়। এ ভয়ের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যারাই কথা বলবে তারাই মৌলবাদীদের গোষ্ঠীবদ্ধ প্রচারণায় লাঞ্চিত হবে, অপমানিত হবে এবং নিহত হবে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন কতকাল চলতে পারে? একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া জগতের সকল কিছুরই একটি শুরু আছে এবং শেষে পরিসমাপ্তি আছে। কোন কিছুই অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না বা চলে না।
হুমায়ুন আজাদের 'বই' নামক একটি বিখ্যাত কবিতা আছে।কবিতাটিতে কবি হুমায়ুন আজাদ শিশুদের মনে লোভ ভয়ের সংস্কৃতি বিদূরিত করে শুধু চিন্তার সূর্যকে উদিত করতে চেয়েছেন, যুক্তির গোলাপকে প্রস্ফুটিত করতে চেয়েছেন, চিন্তার ভিন্ন আলো জালাতে চেয়েছেন, মানুষের মধ্যে কোন বিভেদের জাল না বুনে সকলকে ভালবাসতে চেয়েছেন।এর বিপরীতে যে বই মানুষকে ভয় দেখায়, অন্ধ করে, চিন্তাকে বন্দী করে সেই বই থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। এত সুন্দর নৈতিকতা যুক্ত শিশুতোষ কবিতাটিও দেশের পাঠ্যক্রম থেকে সরানো হয়েছে শুধুই মৌলবাদীদের রক্তচক্ষুর নির্দেশনায়। দেশের পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে যখন সাংবাদিকরা কবিতাটি বাদ দেয়ার কারণ জানতে চান, তখন পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নিরব কবি হয়ে যায়। বাজারে রটনা, এ কবিতাটিতে নাকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া হয়েছে। এ কবিতাটিতে যে কোথায় ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়া হয়েছে, তা আমার ছোটমাথায় বোধগম্য নয়। বিষয়টি অনেকটা এমন: "ঠাকুর ঘরে কে? আমি কলা খাইনি।"
"যে-বই জুড়ে সূর্য ওঠে
পাতায় পাতায় গোলাপ ফোটে
সে-বই তুমি পড়বে।
যে-বই জ্বালে ভিন্ন আলো
তোমায় শেখায় বাসতে ভালো
সে-বই তুমি পড়বে।
যে-বই তোমায় দেখায় ভয়
সেগুলো কোন বই-ই নয়
সে-বই তুমি পড়বে না।
যে-বই তোমায় অন্ধ করে
যে-বই তোমায় বন্দী করে
সে-বই তুমি ছুঁবেই না।"
আজ পহেলা বৈশাখ উদযাপন হারাম, কাল অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসবে অংশগ্রহণ করা হারাম, পরশুদিন বাঙালি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হারাম, এরপরের দিন শহীদ মিনারে ফুল দেয়া হারাম-এ মৌলবাদীদের হারামের তালিকাটি দেখলে সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় বাঙালি সংস্কৃতির অধিকাংশই তাদের কাছে হারাম। সকল কিছুই তাদের কাছে হারাম, কিসে তাদের আরাম তা শুধু তারাই ভালকরে জানে। মৌলবাদীরা এদেশের সুজলা সুফলা আবহমান সংস্কৃতিকে যেভাবে ধুলিস্যাৎ করে; সেস্থলে যাযাবর আরবীয় মরু সংস্কৃতিতে প্রতিস্থাপিত করার প্রচেষ্টা করছে সত্যি দুর্ভাগ্যজনক। মৌলবাদীদের এ দেশীয় সংস্কৃতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের সরাসরি প্রতিরোধ না করে, আমরা প্রগতিশীলতার ছদ্মবেশ ধারণ করে অধিকাংশক্ষেত্রেই জ্ঞানত বা অজ্ঞানত মৌলবাদীদের চিন্তাকেই পরিপুষ্ট করে তুলছি।
দেশে জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে মৌলবাদীরা যখন যুদ্ধংদেহী মনোভাব ব্যক্ত করছে সর্বক্ষেত্রে ; ঠিক তখনই প্রগতিশীলদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়; মূর্তি ইসলামে নিষিদ্ধ, ভাস্কর্য নয়। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ভাবটা এমন মূর্তি ভাঙা যায়, ভাস্কর্য ভাঙা যায় না। প্রগতিশীলরা মৌলবাদীদের বোঝাতে ভাঙা টেপরেকর্ডারের মত ইসলামি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের উদাহরণ দিয়ে চলছে। ভাস্কর্য নিষিদ্ধ নয়, ভাস্কর্য আরবের বিভিন্ন দেশ সহ তুরস্ক, ইরান এবং পাকিস্তান সহ প্রায় সকল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেই আছে। হাসি পায় যখন দেখি, আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য বিভিন্ন উপাদানের পক্ষে উদাহরণ ধার করে নিয়ে আসতে হয় বিভিন্ন যাযাবর সংস্কৃতি থেকে। এইদেশে আজও দেশের কোথাও না কোথাও থেকে মাঠির নিচে থেকে পাওয়া যায় প্রতিনিয়ত মূর্তি। মাটি খুড়লেই মূর্তি, পুরনো পুকুরে সংস্কার করতে গেলে পাওয়া যায় মূর্তি, পুরনো কোন বসতবাড়ি খুড়লেও পাওয়া যায় মূর্তি, রাস্তা সংস্কার করতে গেলেও পাওয়া যায় মূর্তি। অর্থাৎ এ ভূখণ্ড মূর্তিময়। এ ভূখণ্ডের মাটিতে সর্ব প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনও মূর্তি। দেশের পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনার সাথে সাথে জাদুঘরগুলোও মূর্তিময়।
যে মাটি থেকে প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও থেকে পাওয়া যাচ্ছে অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত মূর্তি; অথচ আমরা সেই মাটিতে বসবাস করে লালিতপালিত হয়ে মূর্তির বিরোধিতা করছি, ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছি। আবহমান সমৃদ্ধ সংস্কৃতির বিরোধিতা করছি।অযৌক্তিকভাবে ভাঙা টেপরেকর্ডারের মত বলছি, এদেশের জমিনে কোন মূর্তি থাকতে পারবে না। এদের হাবভাব কথাবার্তায় মনে হয়, এদের শেকড় অনেক গভীরে। ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি আজ অনেক শক্তিশালী। এদেশের মৌলবাদীদের সাথে কাছাকাছি গলায় সুর মিলিয়ে অনেকে বলছে, "মূর্তি এবং ভাস্কর্য এক বিষয় নয়, সম্পূর্ণভাবে আলাদা। এ কথাগুলো বলে নিজেদের অজ্ঞাতসারে তারা মৌলবাদীদের হাতকেই শক্তিশালী করে তুলছে। আমরা বুঝে অথবা না বুঝেই তাদের ফাঁদে পরে তাদের মগজধোলাইয়ের শিকার হয়ে যাচ্ছি। বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের যথাসাধ্য ভাবা উচিত। হাজার হাজার বছরের সংস্কৃতিতে বুকে বহন করে এ বঙ্গভূমিতে আমরা বাঙালি নামক একটা জাতি রাষ্ট্র পেয়েছি। এদেশের মাটি খুড়লে আজও প্রতিনিয়ত মূর্তি বের হয়, অথচ আমরা মূর্তির পক্ষে কথা বলার জন্য বিভিন্ন দেশের রেফারেন্স নিয়ে আসতে হয়। যাদের রেফারেন্স আমরা ব্যবহার করছি, তারা আমাদের বাঙালির সমৃদ্ধ সংস্কৃতির আদর্শ হতে পারে না। অন্যরা আমাদের আদর্শ নয়, আমরা নিজেরাই আমাদের আদর্শ। বাঙালি সংস্কৃতির সাথে মূর্তি অবিচ্ছেদ্যভাবে ছিল, আছে এবং অনন্তকাল থাকবে। আমাদের যতগুলো পুরানো পুরাতাত্ত্বিকক্ষেত্র বৃহত্তর বঙ্গে আবিষ্কার হয়েছে প্রত্যেকটিতেই অসংখ্য মূর্তি পাওয়া গেছে। এই দেশে যারা অন্যদেশের সংস্কৃতি চালাতে চায়, এ দেশের সংস্কৃতি বিরোধী সেই মানুষগুলোর জানা উচিত-"বাঙালির পরিচয় শুধু তার ভাষায় নয়, সংস্কৃতি, পুরাতত্ত্ব, ইতিহাস এবং দর্শনেই পরিচয়টি পূর্ণতাপ্রাপ্ত । কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মৌলবাদীদের অন্ধ গড্ডালিকা প্রবাহ ইতিহাস পড়ে না, সংস্কৃতির সাথেও তাদের খুব একটা সম্পর্ক নেই বলা চলে। তারা এদেশীয় কোমল স্নিগ্ধ সুজলা সুফলা সংস্কৃতিকে খুব একটা পছন্দও করে না। তাদের কাছে সংস্কৃতি মানে মরুসংস্কৃতি। রুক্ষ মরুভূমি সংস্কৃতি দিয়ে আজকে তারা যখন সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বাঙালি সংস্কৃতিকে পুনর্গঠিত করতে চাচ্ছে; বিষয়টি তখনই গোল বেঁধে যাচ্ছে এবং পথহারাদশা হয়ে যাচ্ছে।
কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের সেই পথিকের মত, মনে হয়, ১৯৭১ সালের অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের পথিক বুঝি সত্যি সত্যি পথ হারিয়ে যাচ্ছে। এ দেশে সাত-সমুদ্র সেঁচা ধন স্বাধীনতাকে আমরা পেয়েছি একটি অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের পেক্ষাপটে। আজকে আমরা কেন যেন হেলায় হারাতে বসেছি সেই অমূল্যধনকে। একটি সার্বজনীন আবহমান বিষয়কে নিজের ধর্মের আলোকে, নিজের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে দেখা শুরু করেছি। নিজে যে চশমা পড়েছি লাল চশমা হোক বা সবুজ চশমা হোক নিজের চশমার আলোকে আমরা অন্যদের দেখা শুরু করেছি। মৌলবাদীরা আজকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে, এরপরে মুক্তিযুদ্ধের যত ভাস্কর্য আছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন স্থানে তারা এর বিরোধিতা করছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সহ বিভিন্ন ভাস্কর্যগুলো ভাঙ্গার প্রচেষ্টা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'অপরাজেয় বাংলা', 'স্বোপার্জিত স্বাধীনতা' এ ভাস্কর্যগুলো যখন হয় তখনও মৌলবাদী গোষ্ঠী এর পিছনে লেগে ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছিল। ভাস্কর্যের চেতনা আমাকে দেশপ্রেমের পথে উদ্বুদ্ধ করে। পক্ষান্তরে মৌলবাদীরা এ ভাস্কর্য দেখে অকারণ হিংসাত্মক হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অপরাজেয় বাংলা' ভাস্কর্যটির দিকে যখন তাকাই, সেই ভাস্কর্য আমাকে শেখায় এই দেশের মুক্তিযোদ্ধারা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এই স্বদেশপ্রেমের ভাস্কর্যটি দেখে কারো যদি অহেতুক চেতনাদণ্ডে আঘাত লাগে, তবে আমাদের কিই বা আর করার আছে?
আজকে তারা বঙ্গবন্ধুর মূর্তিসহ বিভিন্ন শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে নির্মিত বিভিন্ন মূর্তির বিরোধিতা করছে। মৌলবাদীদের হাত যদি এভাবেই দিনেদিনে পরিপুষ্ট হতে থাকে তবে আগামীতে এরাই হয়ত বলতে পারে, মন্দিরে বা মিউজিয়ামেও কোন মূর্তি থাকতে পারবে না। এই নিদর্শন আমরা প্রচুর দেখেছি পৃথিবীতে। আফগানিস্তানের বামিয়ানে পাহাড়ের গায়ে খোদিত বৃহত্তর বৌদ্ধমূর্তি সহ জাদুঘরে সংরক্ষিত মূর্তিগুলোও তালিবান যোদ্ধারা ধ্বংস করেছে। সুধুই সুযোগের অপেক্ষায় আছে এরা। মূর্তি ভাঙতে এদের হাত নিশপিশ করে সর্বদা। এই মৌলবাদীদের হাতকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন ছদ্মবেশীদের অন্ত নেই। এদের অপসৃত করে আমাদের ফিরতে হবে পারের ঠিকানায়, একতার ঠিকানায়, এক অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের ঠিকানায়। তা নাহলে কেউ বাঁচতে পারবে না। মৌলবাদীদের জ্যামিতিক হারে শক্তিবৃদ্ধি হতে থাকলে অসহায় সংখালঘু সম্প্রদায়ের সাথে সাথে একাত্তুরের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জন্ম নেয়া এ রাষ্ট্রটিও তার আসল স্বরূপে বাঁচতে পারবে না। সে তাঁর সুজলা-সুফলা মাতৃত্বের স্বরূপ হারিয়ে হয়ে উঠবে ধু ধু রুক্ষ মরুভূমির ভয়ংকরী কাঁটাবন। আর তাঁর বুকের উপর ধংসের প্রলয় উল্লাস করে বেড়াবে হিংস্র শ্বাপদের দল। কপালকুণ্ডলা যেমন করে পথহারা নবকুমারকে পথ দেখিয়েছিল, আমরাও আছি পথহারা হয়ে এমন কপালকুণ্ডলার প্রতিক্ষায়। জানিনা, সুজন মাঝি তার নাওকে পারে ভিরাতে পারবে কিনা; নাকি অথৈজলে শুধু ভেসেই চলবে আমৃত্যু! বর্তমান পরিস্থিতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতার কয়েকটি চরণ মনে পড়ছে। কবিতাটি তিনি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নাগর নদীর তীরে অবস্থিত পতিসরে বসে ৮ শ্রাবণ, ১৩৪৪ বঙ্গাব্দে লিখেছিলেন।
"অন্ধকারের সিন্ধুতীরে একলাটি ঐ মেয়ে
আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিল আকাশপানে চেয়ে।
মা যে তাহার স্বর্গে গেছে এই কথা সে জানে,
ঐ প্রদীপের খেয়া বেয়ে আসবে ঘরের পানে।"
একবুক আশা নিয়ে সিন্ধুতীরের অন্ধকারে আলোর নৌকা ভাসিয়ে আকাশপানে চেয়ে আছে একলা মেয়েটি। সে জানে একদিন আলোর নৌকা তার ঘরে আসবে। সেদিন কেটে যাবে সকল অন্ধকার।
কুশল বরণ চক্রবর্ত্তী
সহকারী অধ্যাপক,
সংস্কৃত বিভাগ,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়