হবিগঞ্জের চিড়িয়াকান্দি এলাকায় সদর থানা পুলিশের উপস্থিতিতেই "দৈনিক আমার হবিগঞ্জ" পত্রিকা অফিস সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি হিন্দু বাসাবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত সোমবার বেলা ১ টার দিকে "সচেতন নাগরিক সমাজ" নামে একটি সংগঠন "দৈনিক আমার হবিগঞ্জ" পত্রিকা বন্ধের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং সেই মিছিল থেকে এই তান্ডব চালানো হয় বলে জানা গেছে।

 

হামলা চলাকালীন সময়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম ও জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মহিবুর রহমান মাহিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রথমে শতাধিক ব্যক্তি নোয়াবাদ, শংকরের মুখসহ দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার অফিসের প্রবেশদ্বারে আশেপাশের বিভিন্ন পয়েন্টে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়। জমায়েতের একপর্যায়ে তারা পত্রিকা অফিসে হামলার উদ্দেশ্যে আসতে থাকে, পথিমধ্যে পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সুশান্ত দাস গুপ্ত’র শ্বশুরের বাসায় হামলা চালায়।

 

এসময় তারা বিভিন্ন দরজা জানালা, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে লুটপাট চালায়। এমনকি বাসার পানির ট্যাংক ও পানির পাইপ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়। আসবাবপত্র ভাঙচুর করার পর লুটপাট করা হয় মূল্যবান স্বর্ণালাকার, নগদ টাকা, ব্যাংকের চেকসহ ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র। এসময় দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক ওই বাসার ছাদের উপর আশ্রয় নেন।

 

প্রায় আড়াই ঘন্টা ব্যাপী এই হামলা হয়। হামলাকারীরা যাওয়ার সময় আশেপাশের বেশকিছু হিন্দু বাসা বাড়িতেও হামলা এবং ভাঙচুর চালায়। হামলা আর তান্ডবলীলার একপর্যায়ে ১০০/১৫০ জন "দৈনিক আমার হবিগঞ্জ" পত্রিকা অফিসে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ঢুকার চেষ্টা করে। পরে ঢুকতে না পেরে অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। এতে অফিসে থাকা ৪/৫জন সাংবাদিক ইটের আঘাতে আহত হন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি হবিগঞ্জে একটি মন্দিরের জায়গা দখল নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি আবু জাহিরকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। স্থানীয় মেয়র, আতাউর রহমান সেলিম কতৃক চড়ক পূজার স্থান দখল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার দূর্নীতি নিয়ে ফরহাদ হোসেন কলির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সম্মিলিত ভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে সুশান্ত দাশগুপ্ত এবং ভুক্তভোগী হিন্দু পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই তান্ডবের পর থেকেই হামলার শিকার হিন্দু পরিবারগুলো আতংকে রয়েছেন। :বর্তমানে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে উক্ত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশসহ র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।