নেত্রকোনা: হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং সেবা বাস্তবায়নে নেত্র‌কোণা জেলা পুলিশে সংযুক্ত হলো টেকটিক্যাল বেল্ট ও বডি ওর্ন ক্যামেরা।নেত্র‌কোণা জেলা পুলিশের থানা, ফাঁড়ী, ডিবি, ডিএসবি, ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সদস্যদের জন্য ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ ও ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।


২৭ তারিখ সকাল ১০ঃ৩০ এর সময় পুলিশ লাইন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ ও ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জনাব মোঃ আকবর আলী মুন্‌সী, পুলিশ সুপার, নেত্র‌কোণা।


গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে ড. বেনজীর আহমেদ (বিপিএম-বার), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।


উন্নত দেশের পুলিশের মতো এই বডি ওর্ন ক্যামেরা সংযোজনের মধ্যে দিয়ে প্রযুক্তিগত কার্যক্রমে নেত্র‌কোণা জেলা পুলিশ আর এক ধাপ এগিয়ে গেল। এর ফলস্বরূপ পুলিশের কাজে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আসবে সেই সাথে পুলিশের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ তদন্তে সহায়তা করবে এই ক্যামেরা।


এই বডি ওর্ন ক্যামেরাতে আশপাশের প্রতিটি দৃশ্য ধারণ করা থাকে। পুলিশের পাশাপাশি এর সুফল পাবে সাধারণ জনগণও। বডি ওর্ন ক্যামেরা’র মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রমও নজরদারি করা হবে।


বডি ওর্ন ক্যামেরা অডিও, ভিডিও এবং ছবি তুলতে পারবে। জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে যেকোনো স্থানে বসেই সবকিছু তদারকি করা যাবে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কেউ খারাপ আচরণ বা হামলা করলে সেগুলোর রেকর্ড থেকে অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।


পুলিশের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘বডি ওর্ন’ ক্যামেরাগুলো প্রত্যেকটি ভ্রাম্যমাণ সিসি ক্যামেরার কাজ করবে। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে অডিও, ভিডিও এবং স্থিরচিত্র ধারণ করা হবে। মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করেন তাদের কাজ নিয়ে অনেকসময় ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। নিয়মিত অভিযানে কিংবা চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন নিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অনেকসময় অহেতুক অভিযোগ তোলা হয়।


ক্যামেরার মাধ্যমে সেখানকার সার্বিক চিত্র ধারণ হয়ে যাবে। উর্ধ্বতনরা সেই চিত্র দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এছাড়া যেকোনো অপরাধমূলক ঘটনার স্থানের পারিপার্শ্বিক চিত্র ক্যামেরায় ধারণ হলে পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নিতেও সুবিধা হবে।


বিশেষ এ ক্যামেরা ছাড়াও ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ দেওয়া হয়েছে। সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ সংযোজন করা হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশে। ছয় চেম্বারের আধুনিক এই টেকটিক্যাল বেল্টে থাকবে পিস্তল, হাতকড়া, অতিরিক্ত ম্যাগাজিন, এক্সপেন্ডিবল বাটন, পানির পট, টর্চ লাইট ও ওয়ারলেস। এতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের হাত থাকবে সম্পূর্ণ খালি। টেকটিক্যাল বেল্টের মূল স্লোগান হলো ‘হ্যান্ডস ফ্রি পুলিশিং’ মানে হাত খালি রাখা। এতে বড় অস্ত্র বহনের ঝক্কিঝামেলা আর থাকবে না। এতে পুলিশের কাজে গতি আসবে, মনোবলও বাড়বে।


একই সঙ্গে পুলিশকে দেখতেও আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী লাগবে। এছাড়া বিপদগ্রস্ত মানুষের যে কোনো প্রয়োজনে দ্রুত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে পারবে পুলিশ। আবার অপরাধীকে দ্রুত ঘায়েল করতে টেকটিক্যাল বেল্টে থাকা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারবেন অনায়াসেই।


পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ পুলিশকে আধুনিকভাবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি পুলিশে টেকটিক্যাল বেল্টের মতো আধুনিক সরঞ্জাম যুক্ত করতে যাচ্ছেন। প্রথম পর্যায়ে ৩০টি ‘বডি ওর্ন ক্যামেরা’ ও ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ নেত্র‌কোণা জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হলো। পর্যায়ক্রমে সকল ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সদস্যদেরও এসব উপকরণ দেওয়া হবে।


প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ