ঢাকাঃ রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন না করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,`২০১৭ সালে আমরা এই জায়গা বরাদ্দ পেয়েছিলাম। থানা নির্মাণের জন্য এটা সরকার পুলিশকে দিয়েছিল। এটা পুলিশের জায়গা, পুলিশেরই থাকবে। তবে এখানে কোনও থানা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এলাকার মানুষ যেভাবে এই জায়গাটি ব্যবহার করতেন, সেভাবেই ব্যবহার করবেন।’
তাহলে কলাবাগান থানা কোথায় হবে-এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘পরে অন্য কোথাও জয়গা নির্ধারণ করা হবে থানার জন্য।’
তেঁতুলতলা মাঠে থানার জন্য যে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা কোনও সমস্যা না। অবকাঠোমো বেশি কিছু হয়নি। জয়গাটি এলাকাবাসী যেভাবে ব্যবহার করতেন সেভাবেই করবেন।’
এর আগে গতকাল বুধবার তেঁতুলতলা মাঠের পরিবর্তে বিকল্প জায়গায় থানা নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি আলোচনা হোক। এ সময় কনস্ট্রাকশন কাজ বন্ধ থাকবে।’ কাজ বন্ধের বিষয়ে তিনি ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে পরিবেশবাদীরা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রাজধানীর পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতালের উল্টো দিকে তেঁতুলতলা নামে একটি মাঠ রয়েছে। এই মাঠে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করছেন।
মাঠটিতে স্থানীয় শিশুরা খেলাধুলা করে। পাশাপাশি মাঠটিতে ঈদের নামাজ, জানাজাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়। রোববার সকালে ওই মাঠে ইট-সুরকি ফেলা হলে সেখানে গিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন সৈয়দা রত্না। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে তাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তার ছেলে বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এলে তাকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুজনের আটকের খবর পেয়ে বেলা দুইটার দিকে ওই মাঠে যান মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ (বেলা) সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, উদীচীর ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আরিফ নূরসহ কয়েকজন। পরে রাতে মা–ছেলের মুক্তির দাবিতে কলাবাগান থানার সামনে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দা, মানবাধিকারকর্মী ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নেতা–কর্মীরা। সৈয়দা রত্না উদীচীর সদস্য।
বিক্ষোভের মুখে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মা–ছেলেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। সৈয়দা রত্নার ছেলে আইডিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ