বোয়ালমারী (ফরিদপুর): কলেজের এক সাবেক অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত জায়গা অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল করে প্রতিবেশী কর্তৃক রাস্তা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ বোয়ালমারী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডি সূত্রে জানা যায়, শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শংকর প্রসাদ সাহা বোয়ালমারী পৌরসভার ছোট কামার গ্রামে ১৯৮০ সাল থেকে রেজিস্ট্রি দলিল মূলে কেনা জমিতে বাড়ি করে বসবাস করছেন। এদিকে ২০২১ সালে বিধান চন্দ্র রায় নামে জনৈক ব্যক্তি অধ্যক্ষের জায়গার পেছনে সোয়া ৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু সরকারি রাস্তা থেকে তার ওই জমিতে প্রবেশের কোন পথ নাই। বিধান চন্দ্র রায় তার জমিতে প্রবেশের জন্য গত ৪ মার্চ রাত ৪-৫টার দিকে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জন ব্যক্তি নিয়ে অধ্যক্ষের জমির উপর দিয়ে ৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের প্রায় ৪ ফুট চওড়া রাস্তা তৈরি করেন।
পরদিন অধ্যক্ষ এবং তার ছেলেরা রাস্তা তৈরির বৈধতা জানতে চাইলে বিবাদী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ১৫-২০ জন লোক এনে অধ্যক্ষ ও তার ছেলেদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি ও খুন-জখমের হুমকি দেন। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ (সাবেক) শংকর প্রসাদ সাহা জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতির আশঙ্কা করে গত ৫ মার্চ বোয়ালমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডি নাম্বার ২১৬।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ শংকর প্রসাদ সাহা বলেন, ৪৩ বছর আগে আমি জমি কিনেছি। আমার জমির পেছনে একজন জমি কিনে আমার জমি জোরপূর্বক দখল করে রাস্তা করেছে। এতে আমি তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সৃষ্ট ঘটনায় আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
জানতে চাইলে বিধান চন্দ্র রায় বলেন, আমি যখন জমি কিনি তখন ওই স্থান দিয়ে রাস্তা করে আমি চলাচল করতে পারবো বলে মুখে মুখে জমির মালিক ও জমির মালিকের বড় ভাই শংকর সাহার সাথে কথা হয়েছিলো। তবে একথার পরেই তিনি আবার বলেন, আমার দলিলে ওই স্থানে রাস্তা উল্লেখ আছে। এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানায় ১৪ মার্চ এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে থানার এস. আই আব্দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। জানতে চাইলে অধ্যক্ষ শংকর প্রসাদ সাহার ছেলে সঞ্জয় সাহা চন্দন বলেন, আমাদের জমির পেছনে আমার কাকার ৩.২ শতাংশ জমি ছিলো। সেই জমিই তিনি বিক্রি করেছেন। রাস্তার জন্য বিক্রিযোগ্য কোন জমি তার ছিলো না।
থানায় সালিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সালিশে কোন ফয়সালা হয়নি। সালিশে উপস্থিত বোয়ালমারী থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুর রহমান বলেন, রাস্তাটির জায়গার মালিক শংকর স্যার। তবে বিধান রায়ের বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোন পথ নেই। এজন্য ওই পথটি আটকে দিলে তার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। এ ব্যাপারে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফয়সালা হয়নি। ঈদের পর আবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
মুকুল বসু, বোয়ালমারী প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দর্পণ