মনসা মন্দির বা ধনুকা মনসামন্দির শরীয়তপুর জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির ও বাংলাদেশের অন্যতম একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। এটি শরীয়তপুর সদরের ধানুকা নামক গ্রামে অবস্থিত। মন্দিরটি ময়ূর ভট্টের বাড়িতে অবস্থিত। এ বাড়িতে আরও বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে। সবগুলো মন্দির নিয়ে গঠিত বাড়িটিকে একত্রে স্থানীয়রা ময়ূর ভট্টের বাড়ি নামে ডেকে থাকেন।

আনুমানিক প্রায় ৬ শত বছর পূর্বে ধানুকা অঞ্চলে ময়ূর ভট্টের বাড়ি বা মনসাবাড়িটি তৈরি করেন তৎকালীন ধনাঢ্য ব্যক্তি ময়ূর ভট্ট। পরবর্তিতে তার বাড়িতেই তিনি মনসা মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মনসা মন্দিরটি তৎকালীন এ অঞ্চলে খুবই জনপ্রিয় ছিল ও ভারত থেকে এখানে পূজা দেওয়ার জন্য লোক সমাগম হত। মনসা মন্দিরের জনপ্রিয়তার কারণে পুরো বাড়িটিই মনসা বাড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।

মন্দিরটিতে পিতলের তৈরি পুরতান একটি মনসা মূর্তি রয়েছে। জনশ্রুতি অনুসারে মূর্তিটি একবার হারিয়ে গিয়েছিল কিন্তু পরবর্তিতে জেলেরা খুঁজে পেয়ে সেটি রেখে যান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মন্দির তথা বাড়িটির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। বর্তমানে এর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে রয়েছেন ময়ূর ভট্টের বংশধর শ্যামাপ্রদ চক্রবর্তী। বিভিন্ন সময় বাড়ি তথা মন্দির থেকে প্রাচীন পুঁথি উদ্ধার করা হয়েছে।

জনশ্রুতি ও লোককাহিনী অনুসারে, ময়ূর ভট্টের বাড়ির কোন এক কিশোর ফুল কুড়াতে নিয়মিত বাগানে যাতায়াত করতো। সে ফুল কুড়ানোর সময় পরপর দুদিন একটি সাপকে দেখে ভয়ে চলে আসনে ও তৃতীয় দিনে পুনরায় সাপটির দেখা পান। সে সময় সে সাপটিও তার সাথে সাথে বাড়িতে চলে আসে ও তাকে ঘিরে নৃত্য শুরু করে। সে রাতে বাড়ির কর্তা মনসা দেবীকে স্বপ্নে দেখেন ও দেবী তাকে তার মন্দির স্থাপন করে পূজা করার নির্দেশ দেন। তখন ময়ূর ভট্ট এখানে মনসা মন্দিরটি স্থাপন করেন ও পূজা আরম্ভ করেন।এখনো এখানে পূজার সময় সাপের সমাগম হয় বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

দর্পণ ডেস্ক/এডি