দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। যেহেতু করোনার কোন প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি, তাই সচেতনতাই বাঁচার সর্বোত্তম উপায়। কিন্তু আমরা কি সচেতন? সম্ভবত ‘এখনও না’।

মানুষকে সচেতন করতে সরকারি সংস্থা, বেসরকারি এনজিওসহ বিভিন্ন সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। তারা সবাইকে জানাচ্ছে এই মুহূর্তে আমাদের কী করা উচিত আর কী না করা উচিত। করোনা থেকে রক্ষা পেতে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তা হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু বাঙালী নাছোড়বান্দা। ঘর থেকে বের তাকে হতেই হবে। ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য তার অভিনব কিছু পন্থাও আবিষ্কার করেছে। কেউ বের হচ্ছে বাজারের ব্যাগ হাতে আবার কেউ পুরোনো প্রেসক্রিপশন হাতে। যদিও তাদের বাজার কিংবা ওষুধ কোনটাই প্রয়োজন নেই।

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে মজার যে ঘটনা ঘটছে তা হলো ‘চোর পুলিশের দৌড়াদৌড়ি’। পুলিশ-সেনাবাহিনী জন সমাগম রোধ করতে অভিযান পরিচালনা করছে। যা আমাদের সুরক্ষার জন্যই করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো তাদের চেয়েও একধাপ এগিয়ে। দেশের গোয়েন্দা বিভাগের চেয়েও আমাদের গোয়েন্দাগিরি বেশি শক্তিশালী। কখন, কোথায়, কিভাবে পুলিশ জনসমাগম রোধের অভিযান চালাবে সব আমাদের নখদর্পনে। পুলিশ আসার সাথে সাথেই মাঠ ফাঁকা। আর পুলিশ যাওয়ার পরে মাঠে ফিরতে সেকেন্ডের বেশি সময় নিচ্ছি না।

এই ধোঁকা আমরা কাকে দিচ্ছি? পুলিশকে? যদি তাই ভাবেন তবে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আপনি করোনা আক্রান্ত হলে ওই পুলিশ কিংবা প্রশাসনের কর্মকর্তার কিছু আসে যায় না। তবুও তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনাদের বাঁচাতে কাজ করে যাচ্ছেন। লকডাউনের নিয়ম-কানুন যদি আপনি না মানেন তাহলে আপনি নিজেই নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছেন।

আপনি করোনা আক্রান্ত হলে আপনার পরিবারের সদস্যরা আক্রান্তের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। আপনার পরিবারকে যদি বিন্দুমাত্র ভালবাসেন তবে করোনা প্রতিরোধের সকল নিয়ম মেনে চলুন। দয়া করে চোর-পুলিশ খেলা খেলবেন না। সবাই সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন।

বিশ্বজিৎ মজুমদার, যশোর

[এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। বাংলাদেশ দর্পণ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।]