বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মুখে। আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে প্রতিটি দেশ। প্রথম সংক্রমণের পাঁচ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি কোনো প্রতিষেধক। কোনো ওষুধ বা টীকা আবিষ্কার না হওয়ায় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অদৃশ্য এক ভাইরাসের সম্মুখে মানবজাতি আজ হুমকির সম্মুখীন। এই ভাইরাসের করাল থাবায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে বিশ্বের মোড়ল আমেরিকা ও ইউরোপীয় অনেক দেশ।
করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষকরা রাত-দিন একাকার করে চেষ্টা করে যাচ্ছেন সমাধান বের করার। সম্প্রতি ইউরোপের দেশগুলোতে করোনাভাইরাসে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু এবং জনগণের শরীরে কম পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকার মধ্যে একটি সম্পর্ক পাওয়া গেছে নতুন এক গবেষণায়।
ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজে অবস্থিত অ্যাঙলিয়া রাসকিন ইউনিভার্সিটির গবেষক ডা. লি স্মিথ এবং কুইন এলিজাবেথ হসপিটালের ডা. পিটার ক্রিস্টিয়ান ইলি এ ব্যাপারে গবেষণা করেন। এজিং ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল জার্নালে তাদের গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, শরীরে ভিটামিন ডি কম থাকার কারণে দ্রুত ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্তের শঙ্কা থাকে। শ্বেত রক্ত কণিকা প্রাণবন্ত করে তোলার কাজ করে ভিটামিন ডি। কিন্তু শরীরে এর মাত্রা কম থাকলে ভাইরাস দ্রুত সংক্রমণ ঘটায়। করোনাভাইরাস মূলত রোগীদের শরীরে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কম থাকার সুযোগ নিচ্ছে।
ইতালি এবং স্পেনে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার বেশি। এই গবেষণায় দেখা গেছে, উত্তর ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ওই দুই দেশের মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কম। কারণ, হিসেবে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, সেসব দেশে বয়স্ক ব্যক্তিরা সূর্যের আলোতে সেভাবে থাকতে চান না। সে কারণে প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি থেকে তারা বঞ্চিত হন।
সূর্যের আলোতে থাকতে অনীহার কারণে শরীরে গড় ভিটামিন ডি সেসব দেশের মানুষের কম। ডা. লি স্মিথ বলেন, ইউরোপের ২০টি দেশে আমরা পরিসংখ্যান চালিয়ে দেখেছি, যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, তাদের শরীরে ভিটামিন ডি কম।
তিনি আরও বলেন, ভিটামিন ডি পারে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে। যাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর উপস্থিতি কম, করোনা আক্রান্ত হলে তাদের পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। যারা গুরুতর আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছে, তাদেরও ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা যাচ্ছে। সূত্র: এআরইউ, টুডে, মেডিকেল নিউজ টুডে