ঢাকা: বাংলাদেশের বিতর্কিত ‘কঠোর’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
সম্প্রতি করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারের গ্রহণ করা পদক্ষেপের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ১১ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ারও দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ বলেছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া যে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে দেয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করার অভিযোগ এনেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে এমন কোনো কিছু বন্ধ করতে হবে। ১১ জনের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে ও কারাগারে থাকা চারজনকে মুক্তি দিতে হবে।
এইচআরডব্লিউর এশিয়া পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বিবৃতিতে বলেন, শুধু ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ পোস্ট করার কারণে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে- এমন মামলা দায়ের না করে বরং আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনাগুলো গ্রহণ করা উচিত এবং করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে কোনো ফাঁক থাকলে তা বন্ধ করার চেষ্টা করা উচিত।
প্রসঙ্গত, জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে প্রবাসী সাংবাদিক, কার্টুনিস্টসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত ৬ মে রমনা থানায় মামলা করেছে র্যাব। মামলায় কার্টুনিস্ট আহম্মেদ কবির কিশোর, ব্যবসায়ী মোস্তাক আহম্মেদ, রাষ্ট্রচিন্তা নামের একটি সংগঠনের সদস্য ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মো. দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান, প্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল ও সাহেদ আলম, সায়ের জুলকারনাইন, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ ও ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দিদারুল ও মিনহাজ মান্নানসহ চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সামাজিক মাধ্যমে ফেক আইডি দিয়ে কিংবা আইডি হ্যাক করেও অনেককে সরকারের বিরুদ্ধে কিংবা ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে ফাঁসানোর মতোও ঘটনা ঘটে। ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনেক নিরাপরাধ মানুষও বলি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সর্বোপরি মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এই আইন খড়্গ চালিয়েছে যা সুষ্ঠু গণতন্ত্রের পরিবন্থী বলেই মনে করা হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক | বাংলাদেশদর্পণ.কম