বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুপার সাইক্লোন আম্পান অনেকটাই শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। এ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অবস্থান করছে বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলা সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের দেবগ্রামে। ঝড়ের তীব্রতা ও বৃষ্টিপাত উভয়ই এখন কমে গেছে। 

দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাতক্ষীরা শহরে গাছচাপা পড়ে ১ জনের মৃত্যু, মঠবাড়িয়ায় দেয়ালচাপা পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু, বরিশাল বিভাগের ৩ জেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে গাছ চাপা পড়ে, নৌকা-ট্রলার উল্টে এবং আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশ সংলগ্ন দু’টি জেলা উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা ধ্বংস হয়ে গেছে। আম্পানের কারণে ভারতে মারা গেছে অন্তত ৪ জন।

আম্পান নামে প্রবল এই ঘূর্ণিঝড় সাত দিন ধরে বঙ্গোপসাগর থেকে শক্তি সঞ্চয় করে নিজেকে পরিণত করেছে। তবে এর উৎসটি ছিল বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগরে। ১৪ মে প্রথম লঘুচাপ সৃষ্টি হয় এই সাগর অঞ্চলে। এর কয়েক দিন পর নিম্নচাপ। তার পর গভীর নিম্নচাপ। গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়। নাম হয়ে যায় আম্পান। ঘূর্ণিঝড় থেকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। একসময় গত ১৭ মে ‘সুপার সাইক্লোন’–এর পর্যায়ে চলে আসে আম্পান। উপকূল থেকে ৯০০ কিলোমিটার দূরে থাকার সময়ই ‌২০০৭ সালের প্রবল ঘূর্ণিঝড় সিডরের চেয়ে শক্তি অর্জন করে আম্পান। তবে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়েছে বেশ ধীরগতিতে। উপকূলে আসার আগেই বৃষ্টি ঝরাতে থাকে। অবশেষে আজ বুধবার সন্ধ্যার দিকে এটি সাগর উপকূলের পূর্ব দিকে সুন্দরবন–ঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ দিয়ে অতিক্রম শুরু করেছে।