ভারতীয় স্থাপত্যকলার এক মূল্যবান নিদর্শন দিল্লির স্বামীনারায়ণ অক্ষরধাম মন্দির। এই স্বামীনারায়ণ অক্ষরধাম মন্দির গিনেস বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির । বোচাসন্ন্যাসী শ্রী অক্ষর পুরুষোত্তম স্বামীনারায়ণ সংস্থার গুরু প্রমুখ স্বামী মহারাজের অনুপ্রেরণায় এই মন্দিরটি তৈরি করা হয়। সম্পূর্ণ ভারতীয় সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের আদলে তৈরি এই মন্দিরটি।
অক্ষরধাম মন্দিরটি রাজস্থানের গোলাপী বেলেপাথর ও ইতালীয় কারারা মার্বেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। মন্দিরের মূল অংশটি প্রায় ১৪১ ফুট উচু, ৩১৬ ফুট চওড়া, ৩৫৬ ফুট লম্বা এবং মন্দিরটি তৈরিতে কোনো স্টিল বা কংক্রিট ব্যবহার করা হয়নি । মন্দিরের মধ্যে রয়েছে ২৩৪ পিলার, ৯টি বিশাল গম্বুজ ও ২০,০০০ মূর্তি ও হিন্দু দেব-দেবী, সাধু-আচার্যদের স্থাপত্য। মন্দিরটি তৈরিতে ৩০০০ সাহায্যকর্মী আর ৭০০০ ভাস্কর্য শিল্পী দীর্ঘ ৫ বছর যাবত কাজ করেছেন এবং এই মন্দির নির্মাণে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে শোনা যায়। ২০০৫ সালে এই মন্দিরটি ভক্তদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
যোগী মহারাজ যিনি স্বামী নারায়ণ সংস্থার প্রধান ছিলেন তিনি ১৯৬৮ সালে এমন একটি মন্দির নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মারা যাবার পর পরবর্তী প্রধান প্রমুখ মহারাজ কাজ শুরু করেন ১৯৮২ সাল থেকে। ২০০০ সাল থেকে পুরোদমে মন্দিরটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০০৫ সালের ৬ নভেম্বর ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. এ পি যে আব্দুল কালাম, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং বিরোধীদলীয় নেতা লালকৃষ্ণ আদভানী এই মন্দিরটি শিলান্যাস করেন।
শুধু স্থাপত্য নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির হিসেবে 'অক্ষরধাম' গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নিয়েছে। ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের সরকারি বিশ্বরেকর্ড নির্ণায়ক মাইকেল উইটি আমেদাবাদে এসে প্রমুখ স্বামী মহারাজের হাতে শংসাপত্র তুলে দিয়ে যান। অক্ষরধাম মন্দিরে সনাতনী ও আধুনিক হিন্দু ধর্মের রীতি-নীতি স্থান পেয়েছে তাই 'অক্ষরধাম' এই বিশেষ পুরস্কারের যোগ্য।