নেত্রকোনা : নিজের ঘরের আঙিনায় প্রভাবশালী প্রতিবেশীর বাসার সেফটি ট্যাংকের নির্গত কাঁচা মল ও ময়লা পানির ভাগাড় নিয়ে দুই বছর যাবৎ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতে হচ্ছে একটি অসহায় পরিবারের। এ অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি লাভের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট ১৬ টি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন  করেছেন ভূক্তভোগী বিধবা নারী কোহিনূর সুলতানা শিল্পী ও তার পরিবার। 
 
অভিযোগকারী কোহিনূর সুলতানার বাসা নেত্রকোনা জেলা শহরের মোক্তারপাড়ায় ( মসজিদ কোয়ার্টার সংলগ্ন ) অবস্থিত । ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব হল রুমে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী পরিবারটি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। 
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কোহিনূর সুলতানা বলেন, আমার স্বামী মোঃ সাব্বির আহমেদ পারভেজ নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি শাখায় কর্মরত অবস্হায় ২০১৪ সালে মৃত্যু বরণ করেন।
পরে প্রতিবেশি জেলা মাতৃসদন হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ বাবুল সরকার আমার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহায়তায় বাবুল সরকার আমাকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে আমার জায়গাসহ বাসাটি দখল করা চেষ্টা করছে। এমনকি বাবুল সরকার তার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য আমি এবং আমার দুই মেয়েকে হত্যার হুমকিও প্রদান করে। 
 
উপস্থিত সাংবাদিকের সামনে তিনি  আরো বলেন, আমি আইনি সহায়তা ও প্রতিকার চেয়ে প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। জেলা প্রশাসন,পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন,পৌরসভাসহ আরো অনেকের কাছে বিচার চেয়ে কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। বরং রাষ্ট্রের একজন উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তা রাষ্ট্রের আইনকে তোয়াক্কা না করে দুই বছরের অধিক সময় সেফটি ট্যাংকের মুখ খোলা অবস্হায় রেখে পরিবেশ আইনের সুস্পষ্ট লংঘন করছে। সেপটি ট্যাংকের নির্গত কাঁচামল ও ময়লা পানির দূর্গন্ধে এবং অব্যাহত প্রাণনাশের হুমকিতে বাসায় বসবাস করা অসহনীয় হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
 
এ সময় তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি আইনি সহায়তা ও সমাধান প্রত্যাশা করি। অন্যথায়  ডাঃ বাবুল সরকারের কাছে আমার বাসা নাম মাত্র দামে বিক্রি বা বাসাবাড়ি ফেলে অন্যত্র চলে যাওয়া বা আমার দুই কন্যাসহ আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন বিকল্প রাস্তা থাকবে না। 
 
অভিযোগের ব্যাপারে ডাঃ বাবুল সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা । বরং অভিযোগকারী নিজেই এই সেপটি ট্যাংকের পাইপ লাইন ভেঙ্গে  আমাকে হয়রানি  করছে।
 
সংশ্লিষ্ট ৫ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর রফিকুল ইসলামের সাথে অভিযোগের বিষয়ে কথা বললে তিনি জানান, এ রকম একটি অভিযোগ আমাদের হাতে এসেছে। আমি নিজে সরেজমিনে তদন্ত করে ডাঃ বাবুল সরকারকে পাইপ লাইন আটকানোর নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আমাদের কথা রাখছেন না। আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রত্যয়ন পত্র দিব যাতে ভুক্তভূগী আদালতে মামলা করতে পারে।
 
 
 
নয়ন বর্মন
নেত্রকোনা প্রতিনিধি