ভারতের অযোধ্যায় বিতর্কিত বাবরি মসজিদের স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের ব্যাপক তোড়জোর শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে নির্মিত হচ্ছে মসজিদও।
ইতোপূর্বে বাবরি মসজিদের ধ্বংসাবশেষ খুঁড়তে গিয়ে মিলেছে বহু প্রাচীন স্তম্ভ ও মূর্তি। যার ফলে রামভক্তরা দাবি করছেন এখানে নাকি অতীতে রাম মন্দিরই ছিল। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে হিন্দুদের কাঙ্ক্ষিত স্থানেই রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি মিলেছে। তবে আদালত শর্ত জুড়ে দিয়েছে, মুসলিমদের উপাসনার জন্যও সরকারকে পৃথক জায়গা দিতে হবে এবং নতুন মসজিদ নির্মাণ করতে হবে।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, অযোধ্যায় নতুন জায়গায় মসজিদ নির্মাণের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মসজিদের অনিন্দ্যসুন্দর একটি নকশাও প্রকাশ্যে এসেছে। তবে নতুন মসজিদের নাম সম্রাট বাবরের স্মৃতি বিজড়িত ‘বাবরি মসজিদ’ থাকছে না।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, অযোধ্যায় নতুন মসজিদটির নাম হতে পারে আহমদ উল্লাহ শাহের নামে। এখনই এটা চূড়ান্ত না হলেও, আপাতত প্রস্তাবিত এ নামটিই সবার পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।
আহমদ উল্লাহ শাহ কে ছিলেন? তিনি ছিলেন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান। ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে এক সশস্ত্র বিপ্লবে তিনি শহীদ হয়েছিলেন। ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহের প্রাকমুহূর্তে তিনি ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। অযোধ্যাকে বিপ্লবের কেন্দ্র বানিয়ে তিনি আওয়াধ এলাকাজুড়ে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। ব্রিটিশদের মাঝে ভীতির সঞ্চার করেছিলেন তিনি। ঐতিহাসিক ও গবেষকরা বলেন, তিনি ধর্মপ্রাণ মুসলিম হলেও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির এক মূর্ত প্রতীক ছিলেন। ব্রিটিশরা তার মাথার মূল্য ধার্য করেছিল ৫০ হাজার রৌপ্য মুদ্রা। ১৯৫৮ সালের ৫ জুন ব্রিটিশদের অধীনস্থ রাজা জগন্নাথ সিং আহমদ উল্লাহকে হত্যা করে।
এই দেশপ্রেমিক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামেই হতে পারে নতুন মসজিদের নাম। ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের সম্পাদক আতহার হুসাইন বলেন, মসজিদ ট্রাস্ট এ নামটিই প্রস্তাব করছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শিগগিরই আসতে পারে।
বিদেশ ডেস্ক, বাংলাদেশদর্পণ.কম