চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) বিকল্প আরেকটি প্ল্যাটফর্ম বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭। যার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবে ধনী দেশগুলোর এই জোট। যুক্তরাজ্যের কর্নওয়ালে চলমান জি ৭ সম্মেলনে দেশগুলোর নেতারা এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছান। এছাড়া নিম্ন ও মধ্যম আয়ের কোম্পানিগুলোকে উন্নত অবকাঠামো তৈরিতে সহায়তা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জি-৭।


এদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে তিনি এ আহ্বান জানান। বলেন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা চালিত বিল্ড বেটার ওয়ার্ল্ড পরিকল্পনাটি চীনা প্রকল্পটির বিকল্প হতে পারে।


একটি প্রতিবেদন বলছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামোয় বেইজিংয়ের বিনিয়োগকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নতুন জোট গঠনের আহ্বান জানান বাইডেন। এছাড়া চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি তোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সমালোচনা করেন জোরপূর্বক মুসলিমদের বন্দী শিবিরে আটকে রাখা ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ।


বিশ্বব্যাপী চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ ছিল সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অন্যতম ইস্যু। বিশেষ করে বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প ঠেকাতে একাট্টা জি ৭।


১১ জুন থেকে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ১৩ জুন পর্যন্ত। যেখানে এবার প্রাধান্য পাবে ভ্যাকসিন কূটনীতি, বিশ্ববাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটের মত বিষয়গুলো। এছাড়া আলোচনায় আসতে পারে গুগল, অ্যাপল ও অ্যামাজনের মতো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ করপোরেট কর পরিশোধের ব্যাপারে চাপ প্রয়োগের বিষয়টি। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপানের মত ধনী দেশগুলো একত্রে কোন বৈঠকে মিলিত হয়েছে।


উল্লেখ্য, জি ৭ সম্মেলন শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরের গন্তব্য সবচেয়ে আলোচনায়। এ পর্যায়ে তিনি যাবেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। আগামী ১৬ জুন সেখানে তিনি সাক্ষাৎ করবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। ইউক্রেন, সাইবার হামলা এবং রাশিয়ার নতুন পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের পদক্ষেপ নিয়ে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মুখোমুখি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বিশ্বের ক্ষমতাধর দুই নেতা।

সেখানে আলোচনা হতে পারে চলমান করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও আঞ্চলিক সংঘাত নির্মূলের মতো বিষয়গুলো। এছাড়া পুতিনবিরোধী রুশ নেতা আলেক্সেই নাভালনির বিষয়টিও আলোচানায় আসতে পারে। কারণ সম্প্রতি নাভালনির সাথে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়ার একটি আদালত।