সেঞ্চুরিটা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। সেদিকেই গুচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ মনযোগ হারিয়ে ফেললেন লিটন দাস। ফিরে গেলেন ৯৫ রানে। তবে তার রানটা ছিল পরিস্থিতির বিচারে মূল্যবান। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মিলে জুটিতে বিপর্যয় ঠেকিয়েছেন। ৮ উইকেটে ২৯৪ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
১৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ কাঁপছিল। সেখান থেকে টেনে তোলেন লিটন আর মাহমুদউল্লাহ। সপ্তম উইকেটে দুজন শত রানের জুটি পার করে আরও এগিয়ে যাচ্ছিলেন। লিটনের রান ছিল ৯৫। কিন্তু প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতেই হলো ছন্দপতন। টিরিপানোকে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিলেন ৯৫ রানে।
পরের বলেই আবার টিরিপানোর আঘাত। এবার সোজা বলে প্যাডে লেগে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তখন মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ দ্রুত গুটিয়ে যেতে পারে। কিন্তু বাকি সময়ে তাসকিনের সঙ্গে বিপদ হতে দেননি মাহমুদউল্লাহ। এর মধ্যে ইনসাইড এজে চার পেয়ে ফিফটি হয়েছে মাহমুদউল্লাহর। সেটি আবার এক বছর পর দেশের হয়ে ৫০তম টেস্ট খেলতে নেমে। দিন শেষে অপরাজিত আছেন ৫৪ রানে, তাসকিন আছেন ১৩ রানে।
তার আগে দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের দুর্দশা আরও বেড়েছে। মুশফিকের পর এই সেশনে ফিরে গেছেন সাকিব ও অধিনায়ক মুমিনুলও। পরে আর বিপদ বাড়তে দেননি লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ। ১৬৭ রানে ৬ উইকেটে তাই চা বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ।
মুশফিক আর মুমিনুল এই সেশনে শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু মুজারাবানির বলে একটা বল ছেড়ে দিয়ে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন মুশফিক। যদিও রিপ্লেতে মনে হয়েছে বল স্টাম্পের ওপর দিয়ে যেত। তবে ডিআরএস না থাকায় রিভিউ নিতে পারেননি মুশফিক। আউট হয়েছেন ১১ রানে।
সাকিব প্রথম বলেই আউট হতে পারতেন। কিন্তু বেঁচে গেছেন একটুর জন্য। খুব বেশিক্ষণ টেকেননি। উইকেটের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন ৩ রান করে।
মুমিনুলও রান পেলেও আউট হতে পারতেন। অন্তত দুবার জীবন পেয়েছিলেন। একবার সহজ রিটার্ন ক্যাচ ধরতে পারেননি মুজারাবানি। শেষ প্ররযন্ত নিউয়াচির বলেই আউট হয়েছেন ৯২ বলে ৭০ রান করে। ১৩২ রানে তখন ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ।
তবে এরপর লিটন আর মাহমুদউল্লাহ আর বিপদ হতে দেননি। লিটন অপরাজিত ২৬ রানে, মাহমুদউল্লাহ ১৪ রানে।
তার আগে বাংলাদেশের প্রথম সেশনেই নেই ৩ উইকেট। আউট হয়ে গেছেন সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম। মুমিনুল হকের সাথে ব্যাট করছেন মুশফিকুর রহিম।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্লেসিং মুজারাবানির তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। সাইফ হাসান প্রথম ওভারে মুজারাবনির ভেতরের দিকে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে গেছেন কোনো রান না করে। যেভাবে আউট হয়েছেন, আরও একবার প্রশ্ন উঠেছে তার টেকনিক নিয়ে। শান্তও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন মাত্র ২ রান করে।
৮ রানে ২ উইকেট হারানোর পর মুমিনুল আর সাদমান হাল ধরেছেন। দুজন সেট হয়ে শটও খেলতে শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ২৩ রান করে লাঞ্চের আগে এনগারভার বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন সাদমান। মুমিনুল আছেন ৩২ রানে, মুশফিক অপরাজিত ১ রানে।
হাঁটুর চোটে তামিম ইকবাল অনিশ্চিত ছিলেন। অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেছিলেন মুমিনুলের জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তামিমকে ছাড়াই নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে হারারে টেস্টে।
সাকিব ফিরেছেন দলে, চোট কাটিয়ে আছেন মুশফিকও। এক বছর পর আবারও টেস্ট দলে ফিরে একাদশে আছেন মাহমুদউল্লাহ। দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেন আছেন একাদশে, আবু জায়েদ ও শরিফুল ইসলাম আছেন বাইরে। এক স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে নামছে বাংলাদেশ, সঙ্গে সাকিব থাকবেন অলরাউন্ডার হিসেবে।