ভারী বর্ষণ থেকে সৃষ্ট বন্যায় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। তীর্থস্থান তিরুপতিতে পানিবন্দী রয়েছেন কয়েক শ’ পুণ্যার্থী। ভারতীয় বিমানবাহিনী, এসডিআরএফ ও দমকলের কর্মীরা সম্মিলিতভাবে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। খবর এনডিটিভি।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিরুপতির উপকণ্ঠে স্বর্ণমুখী নদীর পানি স্থলভাগে ঢুকে পড়েছে। এ ছাড়া, ওই এলাকার জলাধারগুলোও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ওই এলাকায় অনেকে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। 

অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন তিনটি বাস বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় ও রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। পুরোদমে চলছে উদ্ধার তৎপরতা।

বন্যার কারণে সবচেয়ে বিপর্যয়ে পড়েছে অন্ধ্র প্রদেশের রয়ালাসিমা অঞ্চল। এ ছাড়া, চিত্তুর, কাড়াপা, কুরনুল ও অনন্তপুরম জেলার মানুষও বন্যার কবলে পড়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। কিছু কিছু জায়গায় সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে সড়কে থাকা কিছু গাড়ি।

গতকাল শুক্রবার ফ্লাইট চলাচলের জন্য তিরুপতি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে তীর্থস্থান তিরুমালা পাহাড়ের দিকে যাওয়ার দুটি সড়ক এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে। তিরুমালা থেকে আলিপিরি যাওয়ার সিঁড়িপথটি বন্যা ও ভূমিধসে প্রচণ্ড রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর তাতে ওই পাহাড়ে ওঠা পুণ্যার্থীরা সেখানে আটকে পড়েছেন। তাদের জন্য বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে তিরুমালা তিরুপতি দেবাসথানামের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি।

পার্শ্ববর্তী অনন্তপুরম জেলায় ভেলদুরথি গ্রামে বন্যার পানিতে আটকে পড়া ১০ ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর সদস্যরা। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত একটি খননযন্ত্রের ভেতর আটকে পড়েছিলেন তারা। বিমানবাহিনীর সদস্যরা এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ব্যবহার করে তাঁদের উদ্ধার করেন। ওই এলাকায় বন্যার পানিতে আটকে পড়া একটি গাড়ি থেকে চার ব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্যই গতকাল ওই খননযন্ত্রকে সেখানে নেওয়া হয়েছিল। 

তবে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় খননযন্ত্রটি আটকা পড়ে যায়। এতে সেই খননযন্ত্রে আগে থেকে থাকা ৬ জন, উদ্ধার হওয়া ৪ জনসহ ১০ জন আটকে পড়েন। অনন্তপুরম জেলা প্রশাসক ভারতীয় বিমানবাহিনীর কাছে সহায়তার আবেদন জানালে সফলভাবে সে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়।

কাড়াপা জেলায় ৩৩টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। সেখানে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ১ হাজার ২০০ মানুষকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

আজ শনিবার মুখ্যমন্ত্রী উড়োজাহাজে করে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যাবেন বলে জানিয়েছে তার কার্যালয়। সাউথ সেন্ট্রাল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১১টি যাত্রীবাহী ও এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫টি ট্রেনের চলাচল আংশিক বাতিল এবং ২৭টির চলাচলের পথ পাল্টে দেওয়া হয়েছে।



বাংলাদেশ দর্পণ