শ্রী শ্রী চট্টেশ্বরী কালী মায়ের মন্দির বাংলাদেশের বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরগুলোর মধ্যে অন্যতম। কথিত আছে, প্রায় ৩০০-৩৫০ বছর আগে আর্য ঋষি যোগী ও সাধু সন্ন্যাসীরা এই মন্দির তৈরি করেন। এই মন্দিরটি অবস্থিত চট্টগ্রামের চট্টেশ্বরী সড়কে তিন পাহাড়ের কোণে। এই মন্দিরটি একটি অন্যতম সতীপীঠ। এখানে সতীর একটি দেহখণ্ড পড়েছিল।
মূল রাস্তা থেকে একটু উঁচুতে বাঁধানো চত্বরটির বাঁদিকে কালী মন্দির ও ডানদিকে শিব মন্দির। ভৈরবের এই প্রতীক, সতীর কুণ্ডকে প্রতিরক্ষা দান করেন। শিব মন্দিরের পাশে রয়েছে একটি কুণ্ড।
চট্টেশ্বরী হলেন দেবী আদ্যাশক্তি কালীর একটি রূপ। চট্টেশ্বরী মন্দিরের প্রথম কালীমূর্তি নিয়ে অনেক কাহিনী রয়েছে। খ্রিষাণগীর নামে জনৈক মহারাজ প্রথম দক্ষিণকালী মায়ের একটি নিমকাঠের মূর্তি তৈরি করেছিলেন। এই মূর্তিতে কালীমায়ের পূজা করলে জাগতিক ও পারমার্থিক ফললাভ হয়।
চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালি থানার সরোয়াতলি গ্রামের অধিবাসী সাধক রামসুন্দর দেবশর্মা চট্টেশ্বরী মাতার সেবা-পূজা করতেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনী মন্দিরটির ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। মন্দিরের সেবায়েতের বাড়ি ও বিগ্রহ ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে দেবমূর্তি পুনর্গঠন করা হয়। দেশ স্বাধীনতা লাভের পর মন্দিরের সেবায়েত হন ডাঃ তারাপদ অধিকারী। তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্য মন্ত্রী তরুণ কান্তি ঘোষ এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে তিনি কষ্টি পাথরের কালী মূর্তি ও শ্বেত পাথরের শিবমূর্তি পুনঃনির্মাণ করেন।
এই মন্দিরে প্রধাল উৎসব হলো শ্যামা পূজা। মন্দির খোলা হয় ভোর ৫টায়, বন্ধ হয় রাত ১১টায়।