১৯৬০ সালের ১৮ মে মঙ্গলবার যশোরের বাঘারপাড়ার খানপুর গ্রামে জন্ম। পিতা মৃত অভিলাষ মন্ডল ও মাতা মৃত কালীদাসী মন্ডলের ২পুত্র সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠ। পেশায় একজন সাংবাদিক ও কৃষক সংগঠক। সংবাদপত্রের এজেন্সির ব্যাবসার সঙ্গেও দীর্ঘকাল জড়িত। শিশু অবস্থায় মাতা কালীদাসীর মৃত্যুবরনের পর বিমাতা কুসুমবালাদাসীর স্নেহ-সান্নিধ্যে লালিত। এরপর ৫ বছর বয়সের কালে পিতাও পরলোকগমন করেন। বড় ভাই জগদীশ চন্দ্র মন্ডল ও বিমাতা কুসুমবালাদাসীর তত্তাবধানে বড় হয়েছেন। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে পার্শবর্তী নারিকেলবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে কৃতিত্ত্বের সাথে এস.এস.সি পাশ করেন।এরপর যশোরের এম.এম কলেজ থেকে ১৯৭৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে যশোর সিটি কলেজে রাষ্টবিঞ্জানে অনার্স নিয়ে লেখাপড়া করে ১৯৮১ সালে বি এ অনার্স সার্টিফিকেট অর্জন করেন। ঐ সময় তার প্রথম পুস্তিকা “বিবেকের বানী’’ প্রকাশ পায়। এসময় যশোর পুর্ব বারান্দিপাড়ার বিমল কান্তি আইচের বাড়িতে জায়গিদার থেকে পড়াশোনা করা কালীন সাহিত্য সাধনা ও সাংবাদিকতার চর্চা জোরালো হয়। তার নিজ গ্রামের একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি রমেশ চন্দ্র মন্ডলের জোরালো ভুমিকায় যশোরের “সমাচার সমীক্ষা”,সাপ্তহিক“বহ্নি” ঢাকার “ নয়াবার্তায়” সাংবাদিকতা শুরু করেন।
নিজের সম্পাদনায়“পরিক্রমা”,“ক্ষনিকা”পরবর্তীতে “উচ্চারণ” নামের সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ হতে থাকে। এসময়ে ভারত বাংলার বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় তার ছড়া ও কবিতা প্রকাশ হতে থাকে। ঐ সময় থেকেই যশোরের দৈনিক “স্ফুলিঙ্গ”,ঢাকার দৈনিক“বাংলার বাণী” পরবর্তীতে ঢাকার “লাল সবুজ”পত্রিকায় বাঘারপাড়া প্রতিনিধি হিসাবে সাংবাদিকতায় যথেষ্ট যশ অর্জন করতে থাকেন। যশোরের প্রথিত যশা সাংবাদিক রুকুনউদ্দৌলার সম্পাদিত পাক্ষিক “যশোরের কাগজ” পত্রিকার বাঘারপাড়া প্রতিনিধি হিসাবে লেখা লেখিতেও প্রচুর প্রশংসা অর্জন করেন। যশোরের দৈনিক “লোকসমাজ”১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ সাংবাদিক হিসাবে পুরস্কৃত করেন। যশোরের দৈনিক“লোকসমাজ”১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই ঐ পত্রিকার আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসাবে ২০১৬ সাল পর্যন্ত শালিখা অফিসের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি যশোরের দৈনিক সত্যপাঠ ও ঢাকার দৈনিক বর্তমান পত্রিকায়ও কাজ করছেন।২০১৭ সাল থেকে দৈনিক “গ্রামের কাগজের”শালিখা অফিসের ষ্টাফরিপোর্টার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।।এছাড়া ঢাকার দৈনিক “সংবাদের”বাঘারপাড়া উপজেলা ও শালিখা উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে ১৯৯৬ সাল থেকে কাজ করে চলেছেন। বাঘারপাড়া প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে তিনি কয়েকবার সভাপতি ও সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। শালিখা প্রেসক্লাবেরও বর্তমান সহ সভাপতি তিনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি শালিখার সীমাখালীতে ও আড়পাড়াতে সংবাদপত্রের এজেন্সীর ব্যবসার মাধ্যমে বাঘারপাড়া ও শালিখা উপজেলার অসংখ্য পাঠকের কাছে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন। তার নিজের রচিত “আজকের ছড়া” ও “কবিতালাপ” পাঠকের কাছে নন্দিত ও মনোমুগ্ধকর হয়েছে। এছাড়া ১৯৯৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষা দিবসে প্রকাশিত “ লতিফশাহ- একজন সোনার মানুষের গল্প”বইটি পাঠক হৃদয়ে ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
এসবের পাশাপাশি ২০০১ সালে বাঘারপাড়ার গাইদঘাটে “কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্র” নামের একটি কৃষি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এলাকার কৃষকদের নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঐ সময় ৬৪টি কৃষি ক্লাব গড়ে তোলেন। যশোর সদর,বাঘারপাড়া,শালিখা,মাগুরা সদর ও কালীগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সংগঠিত করে এসকল কৃষি ক্লাব গড়ে তুলে কৃষি বিজ্ঞানী,কৃষিবিদ ও কৃষকদের নিয়ে কৃষির উন্নয়নে নিবেদিত হয়ে বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করে চলেন। বৃহত্তর যশোর অঞ্চলে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষক সংগঠক আইয়ূব হোসেন ও লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডলকে বর্তমান সরকারের কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ২০১০ সালে পুরস্কৃত করেন।৬৪টি কৃষি ক্লাবের মনিটরিংসেন্টার গাইদঘাট কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্রটি স্থাপনের শুরু থেকেই এর সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।ঐ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি কৃষক সংগঠক আইয়ূব হোসেন এর মৃত্যুর পর পরবর্তীতে ২০১৭সালে সকল সদস্যদের সর্মথনে ল²ণ চন্দ্র মন্ডলকে সভাপতির দায়িত্বে বহাল করেন। সেই থেকে তিনি কৃষি প্রযুক্তি বাস্তবায়ন কেন্দ্রের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। এ সবের পাশাপাশি তিনি কৃষক ও সাংবাদিকদের সমস্যার আলোকে সংবাদপত্রে উপসম্পাদকীয় লিখে বিশেষ যশষী হয়েছেন। বর্তমান তিনি বাঘারপাড়া উপজেলা, নারিকেলবাড়ীয়া ইউনিয়ন এবং নিজ গ্রাম খানপুর গ্রামের উপর ইতিহাস ভিত্তিক গ্রন্থ রচনার কাজে নিমগ্ন হয়েছেন।