খুলনা: খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালী গ্রামে শনিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি মন্দির এবং কিছু দোকান ও কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করার ঘটনায় গ্রাম জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। রবিবারও পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান বলেন, এলাকার পরিস্থিতি শান্ত। নতুন কোন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এদিকে বর্বরোচিত হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় পুলিশ ১০ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় শিয়ালী গ্রামে বর্বরোচিত এ ঘটনার পর রূপসা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শক্তিপদ বসু বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ জন থেকে ২০০ জনকে আসামি করে রূপসা থানায় মামলা দায়ের করেন।
ইতোমধ্যে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- শরিফুল ইসলাম (৪০), শেখ মঞ্জুরুল আলম (৪২), শরিফুল শেখ (৩০) রানা শেখ (২২), আকরাম ফকির (৪০), সোহেল শেখ (২০), সম্রাট মোল্যা (২৪), জামিল বিশ্বাস (২৪) শামিম শেখ (২২) ও মোমিনুল ইসলাম (২৮)। গ্রেফতারকৃতরা চাঁদপুর ও শিয়ালী গ্রামের বাসিন্দা।
রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ। তারা এ ঘটনার নিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্তদের সমবেদনা জানান।
ভুক্তভোগীরা জানান, অতর্কিত হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে গ্রামবাসীকে সহযোগিতা না করার অভিযোগ করেন তারা। তবে জেলা ও থানা পুলিশের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর গ্রাম থেকে শতাধিক ব্যক্তি দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিয়ালী গ্রামে হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা এ সময় প্রিতম মেশিনারিজ, গনেশ মল্লিকের ওষুধের দোকান, শ্রীবাস মল্লিকের মুদি দোকান, সৌরভ মল্লিকের মুদি দোকান, অনির্বাণের চায়ের দোকানসহ কয়েকটি দোকান ভাংচুর করে।
রূপসা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, ইতোমধ্যে মামলায় এজাহারনামীয় ৯ জনসহ ১০ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ