নেত্রকোনা: পরিত্যক্ত টয়লেটে ২০ বছর ধরে শিকলবন্দি জীবন কাটানো মানসিক ভারসাম্যহীন সেই শংকরী গুহকে সাহায্যের হাত বাড়ালেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব-উল-আহসান। সম্প্রতি ২০ বছর ধরে শংকরীর টয়লেটে বসবাসের ছবি সামাজিকমাধ্যমে আলোচনার সৃষ্টি করে।
রোববার (২২ আগস্ট) দুপুরে ইউএনও দুর্গাপুর পৌরশহরের আমলাপাড়া এলাকায় শংকরী গুহের বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে তিনি শংকরীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক খোঁজ-খবর নেন।
এ সময় ইউএনও শংকরী গুহের বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিতে তার ভাই জীবন লাল গুহের হাতে নগদ ৬ হাজার টাকা, দুই বান্ডিল ঢেউটিন এবং খাদ্য সামগ্রীসহ তার প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য আরও ৫ হাজার টাকা তুলে দেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইফুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তানজিরুল ইসলাম রায়হান, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নাসির উদ্দিন ও দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতিরফিকুল ইসলাম রফিকসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শংকরী গুহের ভাই জীবন লাল গুহ জানান, আমরা গরিব মানুষ। নিজেদেরই থাকার মতো কোনো ঘর নেই। একটা ভাঙা ঘরে আমরা গাদাগাদি করে থাকি। তাই মানসিক ভারসাম্যহীন বোনটিকে এতদিন টয়লেটে বেঁধে রেখেছি। তার চিকিৎসা করানোর মতো ক্ষমতাও আমাদের নেই। ইউএনও স্যার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এজন্য আমরা খুবই খুশি।
ইউএনও রাজীব-উল-আহসান বাংলাদেশ দর্পণকে বলেন, টয়লেটে শিকলবন্দি শংকরী গুহের বাড়িতে গিয়ে সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়েছি। আপাতত প্রাথমিকভাবে শংকরীকে টয়লেট জীবন থেকে মুক্তি দিতে একটি ঘর নির্মাণের জন্য কিছু নগদ অর্থ, ঢেউটিন ও খাদ্য সামগ্রী তার পরিবারের কাছে দিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে তার উন্নত চিকিৎসাসহ শংকরীর নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নয়ন বর্মন, নেত্রকোনা প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দর্পণ