কক্সবাজার: বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান হিসেবে টেকনাফের সুখ্যাতি থাকলেও এর প্রধান অন্তরায় ছিলো মাদক। মাদকের ছত্রছায়াতে ভরা এ টেকনাফকে সুন্দর ও মাদকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ দাশ ভূয়সী পদক্ষেপ নেন যা স্থানীয় মানুষের কাছে প্রশংসার দাবিদার হয়। বর্তমানে টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানে সফলতার সাথে আইনশৃঙ্ক্ষলা বাহিনী সুখ্যাতি অর্জন করে।

প্রসঙ্গত গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য সিনহা মোঃ রাশেদ খান (৩৬) পুলিশের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিহত হন। জানা যায়, ডাকাত সন্দেহে স্থানীয় জনগণ পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ তাদের কাছে অস্ত্র দেখলে দুই পক্ষের ভুল বুঝাবুঝিতে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ৯টা ৩০মিনিটে শামলাপুর পুলিশ ফাঁড়ীর কাছে পুলিশের একটা ইউনিট ডিউটি করার সময় হঠাৎ একটি  সিলভার রঙের প্রাইভেটকারকে চ্যালেঞ্জ করে দাঁড়াতে বললে গাড়িতে থাকা লোক নিজেদের কাছে থাকা অস্ত্র প্রদর্শন করলে দু’পক্ষের ভুল বুঝাবুঝিতে পুলিশ ফাঁড়ীর ইন্সপেক্টর লিয়াকত গুলি চালায়।

এতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মোঃ রাশেদ খান নিহত হয়। এরপরই ইন্সপেক্টর লিয়াকতসহ ২০ জন পুলিশ সদস্যকে  ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে, উক্ত ঘটনার সাথে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা না থাকা সত্তেও তাকে নিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওসি প্রদীপের একজন নিকটাত্মীয় জানান, সামাজিক মাধ্যমে সেনাবাহিনী কর্তৃক জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন অবস্থায় তিনি, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। জানা যায়, সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাকে পুঁজি করে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপকে জড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

এছাড়াও পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত চলছে এবং সত্যতা উদঘাটন হবে। কিন্তু ওসি প্রদীপ দাশকে জড়িয়ে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট করে এবং সাম্প্রদায়িক ফেসবুক পোস্টে হিন্দু অফিসার ট্যাগ লাগিয়ে উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস ছড়ানোকে নিন্দা জানিয়েছেন এবং আইনের প্রতি সম্মান রেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এছাড়াও ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এ বি এম মাসুদ হোসেন এ বিষয়ে বলেন, শামলাপুরের লোকজন ওই গাড়ির আরোহীদের ডাকাত সন্দেহ করে পুলিশকে খবর দেন। এই সময়ে তল্লাশি চেকপোস্টে গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু গাড়ির আরোহী একজন তাঁর পিস্তল বের করে পুলিশকে গুলি করার চেষ্টা করেন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালায়। এতে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

নিজস্ব প্রতিবেদক | বাংলাদেশদর্পণ.কম