দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুরে কতিপয় কু-চক্রী মহলের উস্কানীতে সরকারী রেকর্ডকৃত স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান দখলের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে দিনাজপুর হিন্দু পরিষদের উদ্দোগ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছে দক্ষিণ গোবিন্দপুর (ডুংডুঙ্গী হাটখোলা) শ্মশান কমিটি।
বুধবার (৩ অক্টোবর) সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোবরদখলের চেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে দক্ষিণ গোবিন্দপুর (ডুংডুঙ্গী হাটখোলা) শ্মশান কমিটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মাইনরেটি ওয়াচ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিকাশ চন্দ্র কর্মকার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর মৌজার ১১১৩ দাগের ২.৫৩ একর সম্পত্তি বৃটিশ আমল থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা শশ্মান হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। এমতাবস্থায় স্থানীয় একটি কু-চক্রী মহল তাদের নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের লক্ষে শশ্মানের সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা চালায়। এই ষড়যন্ত্রকারী ও উস্কানীদাতারা ধর্মপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার শরেন চন্দ্র সরকার, বিরলের জগৎপুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক বিভূতি ভূষন রায় ও দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের মোঃ হাসেম আলী এই তিন ব্যক্তির নেতৃত্বে ও স্থানীয় মহবুর আলী, মোঃ আলমগীর হোসেন, আলতাফ হোসেন, মোঃ মহসিন আলী পটল, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল হালিম, আশাদ হোসেন, মিজানুর রহমান, মুন্না রহমান, মকছেদ আলী, ছাইদুর রহমানসহ কতিপয় ব্যক্তি ওই শশ্মানটি জবর দখলের চেষ্টা চালায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ ব্যাপারে গত ১৪-০৯-২০২১ ইং তারিখ দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বিরল আমলী আদালতে ১৫ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়। এই মামলাটি গত ২৫-০৯-২০২১ ইং তারিখে বিরল থানায় এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে তদন্তপূর্বক আসামীদের গ্রেফতারের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাসীদের এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি। ফলে এলাকাবাসির কেউ মৃত্যুবরণ করলে উক্ত শশ্মানে মৃত ব্যক্তির দাহকার্য ও সমাধি তৈরী করতে পারছি না। মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে আমরা বিপাকে পড়ি বার বার। ডুংডুঙ্গী সীমান্ত বিজিবি ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্টরা বার বার বাধা ও হুমকি প্রদান করছেন যা আমাদের বোধগম্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ১১-১০-২০২১ ইং তারিখ বিকেলে মৃতব্যক্তির লাশ দাহের জন্য শশ্মানে পৌঁছলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বিরল থানা প্রশাসনকে অবহিত করলে গত ১২-১০-২০২১ তারিখ বিরল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ, দিনাজপুর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুজন সরকার, বিরল পৌরসভার মেয়র সবুজার সিদ্দিক সাগর ও বিরল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রমাকান্ত রায় সকলকে নিয়ে বিষয়টি নিরসনের জন্য একটি বৈঠক করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয় সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ২/১ জন কু-চক্রী ও মামলাকৃত আসামীদের চক্রান্তে এহেন কার্যকলাপ ও ভীতি প্রদর্শনের কারণে বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জরুরী ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি যাদব চন্দ্র রায়,সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রভাষ চন্দ্র দাস,হিন্দু পরিষদ বিরল উপজেলা শাখার আহব্বায়ক ও শশ্মান কমিটির সদস্য ডাঃ ফুলেন চন্দ্র রায়, সদস্য দীপ চান চন্দ, শশ্মান কমিটির সদস্য শ্যামা চরন ও দক্ষিণ গোবিন্দপুর শশ্মান কমিটির অন্যান্য সদস্যসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক, বাংলাদেশ দর্পণ